হামাস কী? গাজা ও ইসরায়েলে কী ঘটছে?
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে নজীরবিহীন হামলা চালিয়েছে। হামলায় হামাসের যোদ্ধারা গাজা উপত্যকার কাছে ইসরায়েলি এলাকাগুলোতে ঢুকে পড়ে এবং স্থানীয়দের হত্যা ও অপহরণ করে।
হামাস কী?
হামাস হলো ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী সশস্ত্র সংগঠন যারা গাজা উপত্যকার শাসনকাজ নিয়ন্ত্রণ করে। ২০০৭ সালে গাজার ক্ষমতায় আসার পর ইসরায়েলের সঙ্গে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে হামাস। এই সংগঠনটি ইসরায়েলকে ধ্বংস করা লক্ষ্যে সংকল্পবদ্ধ।
হামাস মূলত একটি সামরিক উইং এবং ইসরায়েলের দৃষ্টিতে এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এছাড়া পশ্চিমা অধিকাংশ দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের চোখেও হামাস একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন। হামাসের পেছনে অর্থ ব্যয় করছে ইরান এবং দেশটি তাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করে আসছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হামাস হাজার হাজার রকেট হামলা চালিয়েছে এবং অন্যান্য সংগঠনকে তা করতে উৎসাহিত করছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলও হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে একের পর এক বিমান হামলা চালায়। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ইসরায়েল মিশরকে সঙ্গে নিয়ে ২০০৭ সাল থেকে গাজা উপত্যকাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
গাজা উপত্যকা কোথায়?
গাজা উপত্যকা হলো ইসরায়েল, মিশর ও ভূমধ্যসাগর দিয়ে ঘেরা ৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০ কিলোমিটার প্রস্থের একটি এলাকা। এখানকার জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ এবং তা বিশ্বের সর্বোচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্বের একটি এলাকা।
গাজার আকাশ ও সমুদ্র উপকূল নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল, পাশাপাশি প্রতিটি মানুষ ও পণ্যের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে সীমান্ত অতিক্রমের সময়। এছাড়া মিশরও তার সীমান্ত দিয়ে গাজায় চলাচলকারী প্রতিটি মানুষ ও পণ্যের ওপর বিশেষভাবে চোখ রাখে।
কেন হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ?
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চিরাচরিত। তবে হামাসের শনিবারের হামলা কোনোরকম সতর্কতা ছাড়াই শুরু হয়। এ সময় হামাস ইসরায়েলে কয়েক হাজার রকেট নিক্ষেপ করে। তাছাড়া বেশকিছু হামাস যোদ্ধা ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে পড়ে ও বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে আর কিছু লোককে অপহরণ করে নিয়ে আসে।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা ব্যর্থতা?
হামাসের হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেট এবং গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে সতর্ক করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ও তহবিলে গড়ে ওঠা গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে ইসরায়েলের। এমনকি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাশাপাশি লেবানন, সিরিয়াসহ সব দেশেই রয়েছে তাদের গোয়েন্দাদের উপস্থিতি। পাশাপাশি গাজা ও ইসরায়েল সীমান্তে রয়েছে কঠোর নজরদারি ক্যামেরা, কাঁটাতারের আচ্ছাদন, গ্রাউন্ড মোশন সেন্সর ও নিয়মিত সৈন্য টহল।
এতোসব ব্যবস্থার পরেও হামাসের আচমকা ও নজীরবিহীন হামলা ইসরায়েলের জন্য একটি বড় গোয়েন্দা ব্যর্থতাই মনে করছেন বিশ্লষকরা।