পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় নিহত ১১
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বন্দুকধারীরা ১১ জনকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের খুঁজছে পুলিশ। আজ শনিবার (১৩ এপ্রিল) এ তথ্য জানান দেশটির কর্মকর্তারা। খবর এএফপির।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বেলুচিস্তান প্রদেশের নওশকি শহরের কাছের মহাসড়কে ছয়জন বন্দুকধারী একটি বাস থামায় এবং যাত্রীদের আইডি কার্ড চেক করে। তারা সেখান থেকে পাঞ্জাবের পূর্বাঞ্চলের ৯ জন শ্রমিককে অপহরণ করে। পরে শ্রমিকদের মরদেহ পাওয়া যায়।
স্থানীয় জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা আল্লাহ বখশ এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকদের মরদেহ পরে মহাসড়ক থেকে দুই কিলোমিটার দূরে পাওয়া গেছে। তাদের একেবারে কাছ থেকে গুলি চালানো হয়েছে।’
একই হামলাকারীরা পরে প্রাদেশিক সংসদ সদস্যের একটি গাড়ি লক্ষ্য করেও গুলি চালায় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আল্লাহ বখশ। তিনি বলেন, ‘ওই আইনপ্রণেতা গাড়িতে ছিলেন না, তবে গাড়িটি খাদে পড়ে গেলে দুজন নিহত হয়েছেন।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বন্দুকধারীরা বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পদ্ধতিতেই হামলা করেছে। এই হামলার পেছনে কারা ছিল, তা নিশ্চিত করার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।’
নওশকি জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ মুসাখাইল এএফপিকে বলেন, ‘পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী হামলাকারীদের ধরতে ওই এলাকায় চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। তবে হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে।’ তিনি ১১ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানের বৃহত্তম ও দরিদ্রতম প্রদেশ বেলুচিস্তানে জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কয়েক দশক ধরে বিদ্রোহ করে আসছে। অতীতে বিদ্রোহীরা জাতিগত পাঞ্জাবি ও সিন্ধিদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। সেই সঙ্গে তারা বিশ্বাস করে, বিদেশি এনার্জি সংস্থাগুলো এই অঞ্চলের সম্পদ তাদের বঞ্চিত রেখে শোষণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে শুক্রবার রাতের এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী ঘটনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘হামলাকারীদের শাস্তি পেতে হবে।’
গত বছরের অক্টোবরে বন্দুকধারীরা ছয় পাঞ্জাবি শ্রমিককে হত্যা করেছিল, যারা একটি বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। গত মাসের শেষের দিকে এই অঞ্চলে চীনের বিনিয়োগের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত একটি বন্দরের অফিসে হামলা চালানোর চেষ্টাকালে সেনাবাহিনীর হাতে আট বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়। এ ঘটনায় দুই সেনাও নিহত হয়েছে বলে জানায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখা।
দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লক্ষ্যবস্তু হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভিযোগ, প্রতিশোধ হিসেবে তাদের সম্প্রদায়ের মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং গুম করা হচ্ছে।