আফগানিস্তানে বন্যায় মৃত্যু ৩০০ ছাড়াল, জরুরি অবস্থা
আফগানিস্তানের কয়েকটি প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৩০০ অতিক্রম করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও আহতদের উদ্ধারে অভিযান চলছে পাশাপাশি কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। খবর এএফপির।
গত শুক্রবারের প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে বেশ কয়েকটি প্রদেশের নদীগুলো ফুলে-ফেঁপে ওঠে। পাশাপাশি কাদামিশ্রিত পানিতে গ্রামের পর গ্রাম ও ফসলের ক্ষেত ডুবে যায়। সাহায্যকর্মীদের বিভিন্ন গ্রুপ এই পরিস্থিতিকে বড় ধরনের ‘মানবিক জরুরি পরিস্থিতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
গতকাল শনিবার (১১ মে) বিভিন্ন স্থানে কর্দমাক্ত ও ধ্বংসের আবর্জনার মাঝখানে থাকা বাড়িঘর থেকে অনেক বেঁচে যাওয়া লোকজনকে উদ্ধার করা হয়। কর্তৃপক্ষ ও বেসরকারি সাহায্য সংস্থার নিয়োজিত কর্মীরা এই কাজে অংশ নেয়। তারা জানায়, বন্যায় বেশকিছু এলাকা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ডব্লিউএফপির দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তরাঞ্চলীয় বাগলান প্রদেশ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু এই প্রদেশেই ৩০০ জনের বেশি নিহত হয়েছে আর হাজার হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস হয়ে গেছে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের যোগাযোগ কর্মকর্তা রানা দেরেজ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমাদের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, বন্যায় এ পর্যন্ত ৩১১ জন মারা গেছে। দুই হাজার ১১টি বাড়িঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং দুই হাজার ৮০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
সরকারি হিসাব ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্য অনুসারে অবশ্য মৃতের সংখ্যায় অনেক গড়মিল রয়েছে। এর আগে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছিল, বন্যায় ২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া এখনও অনেক লোক নিখোঁজ রয়েছে।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মাতিন কানি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বাগলান প্রদেশে ১৩১ জন নিহত হয়েছে। তবে সরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি আরও জানান, উত্তরাঞ্চলের তাখার প্রদেশে ২০ জন ও বাদাখতানে আরও দুজন মারা গেছে।
দেশটির তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘এই দুর্যোগে কয়েকশ লোক প্রাণ হারিয়েছ।’ তিনি আরও জানান, বন্যার কারণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যায় কাগলান, তাখার, বাদাখশানসহ পশ্চিমাঞ্চলীয় ঘোর ও হেরাত প্রদেশেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।