বৈরুতে হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে ইসরায়েলের বিমান হামলা
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সপ্তাহান্তে গোলান মালভূমির ইসরায়েলি অধিকৃত অংশে লেবানন থেকে ছোড়া রকেটের আঘাতে ১২ তরুণ নিহত হওয়ার ঘটনার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এ হামলা চালানো হলো। এতে গোলান হামলার সঙ্গে জড়িত হিজবুল্লার একজন কমান্ডার নিহত হয়েছেন। খবর এএফপির।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমান হামলায় হিজবুল্লার জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ফুয়াদ শুকুর নিহত হয়েছেন। গত শনিবার গোলান মালভূমির ইসরায়েলি অধিকৃত অংশের একটি ফুটবল মাঠে খেলার সময় রকেট হামলায় হতাহতের ঘটনার জন্য তাকে দায়ী করে আসছিল ইহুদি রাষ্ট্রটি।
হিজবুল্লাহ মিলিশিয়াদের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, শুকুর হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলেন, তবে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। এই তথ্য অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
ওই সূত্রটি আরও জানায়, ফুয়াদ শুকুর লেবাননে দক্ষিণাঞ্চলে সামরিক তৎপরতায় কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০০৮ সালে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে হিজবুল্লাহ কমান্ডার ইমাদ মুঘনিয়েহ নিহত হওয়ার পর শুকুর তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ওই গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের জন্য হিজবুল্লাহ ইসরায়েলকে দায়ী করে আসছে।
এর আগে শুকুরের মাথার জন্য ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। এ ছাড়া তিনি ১৯৮৩ সালে বৈরুতে মার্কিন মেরিন কোরের ব্যারাকে প্রাণঘাতী হামলায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে জানায় মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে জানায়, গতকালের ইসরায়েলি হামলায় দুজন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও বেশ কিছু লোক। পরে অবশ্য মন্ত্রণালয়টি বলেছে, হামলায় দুই শিশুসহ তিনজন মারা গেছে এবং আহত হয়েছে ৭৪ জন।
এএফপির একজন ফটোগ্রাফার জানান, হামলার লক্ষ্যবস্তু আট তলা ভবনটি ভেঙে পড়েছে এবং চিকিৎসাকর্মীরা সেসময় আহতদের হাসপাতালে নিতে ছোটাছুটি করছিল এবং স্থানীয় লোকজন ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আহতদের বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।
এদিকে, লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘এটা ইসরায়েলের নির্লজ্জ আকর্ষণ।’
গোলান মালভূমির মাজডাল শামস এলাকার ফুটবল মাঠে শনিবারের হামলার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও লেবানন আবারও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। এর মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এর আগে ২০০৬ সালে লেবানন ও ইসরায়েল প্রথমবারের মতো সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল।