গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন শর্ত প্রত্যাখ্যান হামাসের
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কাতারে হামাস ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মধ্যে দুদিন ধরে চলতে থাকা আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব করা নতুন শর্তাবলিকে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি। খবর এএফপির।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধের ইতি টানতে দুপক্ষকে একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে এবং হামাসের শর্ত প্রত্যাখ্যানের পরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আলোচনার অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা এতো কাছাকাছি আর কখনো পৌঁছাইনি।’
এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আলোচনার প্রস্তাবনাগুলোকে আরও সামনে এগিয়ে নিতে এ সপ্তাহেই মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসছেন।
গত ৩১ জুলাই ইরানে এক হামলায় হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার পর অভিযোগের আঙুল তোলা হয় ইসরায়েলের প্রতি। ইরান জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়া হবে। এই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে আরও ব্যাপক আকারে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি ওয়াশিংটনও তৎপর হয়ে ওঠে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি টানতে।
এ বিষয়ে গত মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রস্তাবিত একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে আসে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা। বাইডেন অবশ্য পরে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের প্রস্তাবনার আলোকেই তিনি ওই চুক্তির কাঠামোটি উপস্থাপন করেছিলেন।
কয়েক মাসের আলোচনার পরও যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে এবং ইসরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে কোনো সমাধানে আসতে ব্যর্থ হয় সব পক্ষ। অবশ্য দুদিন ধরে শুরু হওয়া এবারের আলোচনাটি খুবই গঠনমূলক বলে জানিয়েছিল মধ্যস্থতাকারীরা। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা জানায় যুক্তরাষ্ট্র ‘সেতুবন্ধনের প্রস্তাব’ তুলে ধরেছে এবং তা নিয়ে আগামী সপ্তাহে মিসরের রাজধানী কায়রোতে নতুন করে আলোচনা শুরু হবে।
এদিকে, হামাস ‘নতুন শর্তগুলো’ ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এসেছে এমন অভিযোগ করে এর বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মধ্যস্থতাকারীদের ওপর চাপ দিচ্ছেন, যাতে হামাস বাইডেনের কাঠামো অনুসারে তৈরি ওই শর্তগুলো মেনে নেয়।
গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলা ও বোমাবর্ষণে এ পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিরীহ নারী ও শিশু। যুদ্ধে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপরি ভেঙে পড়েছে।