লেবাননজুড়ে দ্বিতীয় দফায় পেজার বিস্ফোরণ, নিহত ২০
লেবাননে দ্বিতীয় দফায় তারবিহীন যোগাযোগের যন্ত্র ‘পেজার’ বিস্ফোরণে ২০ জন নিহত এবং ৪৫০ জন আহত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য দিয়েছে। খবর বিবিসির।
গতকাল বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) লেবাননের রাজধানী বৈরুত, বেকা উপত্যকা ও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহ সদস্যদের ব্যবহার করা ওয়াকিটকিগুলো একে একে বিস্ফোরিত হতে থাকে।
গত মঙ্গলবার প্রথম দফায় পেজারগুলো বিস্ফোরিত হয়ে যে ১২ জন নিহত হয়, তাদের জানাজায় অংশ নেওয়ার সময় গতকাল আরও বেশকিছু ওয়াকিটকি হিসেবে ব্যবহার করা পেজারগুলো বিস্ফোরিত হয়ে নতুন করে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। ইরান ভিত্তিক মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ এই ধরনের হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে এলেও ইহুদি রাষ্ট্রটি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে আরও এক ডিভিশন সৈন্য মোতায়েনের পর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্ত সম্প্রতি ঘোষণা করেন ‘নতুন ধাপের যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। তার এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পেজার বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটল।
এদিকে, এ ধরনের হামলার পর জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উদ্ভূত পরিস্থিতিকে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার জন্য নাটকীয় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা হিসেবে বর্ণনা করে সবাইকে হুঁশিয়ার করেছেন। তিনি এমন পরিস্থিতিতে সবাইকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনেরও আহ্বান জানিয়েছেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে গুতেরেস বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে এসব ডিভাইসগুলো বিস্ফোরিত করার যুক্তি হিসেবে বলতে হয়, কোনো বড় ধরনের সামরিক অভিযানের আগে এটি আঘাত করার ক্ষেত্রে একটি আগেভাগে নেওয়া তৎপরতা।’
গাজায় ১১ মাস ধরে চলতে থাকা হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাবে দুই দেশের সীমান্তে মাঝেমধ্যেই পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটলেও নতুন করে এই হামলার মাধ্যমে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছেই।
গতকাল বুধবারের বিস্ফোরণের পরপর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু উত্তরাঞ্চল থেকে ১০ হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত লোকজনকে নিরাপদে তাদের বাড়িতে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্ত বলেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধের একটি নতুন ধাপের সূচনা করেছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনীও নিশ্চিত করেছে, গাজায় মোতায়েন থাকা একটি সেনা ডিভিশনকে উত্তর দিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নতুন কৌশল হিসেবে।
মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ হামাসের প্রতি তাদের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, সীমান্ত সংঘাত তখনই বন্ধ হবে যখন গাজায় যুদ্ধ শেষ হবে।
এদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সংগঠনটি তাদের পরবর্তী কর্মতৎপরতা নিয়ে কী ভাবছে, সে বিষয়ে হিজবুল্লাহর প্রভাবশালী নেতা হাসান নসরুল্লাহ খুব শিগগিরই বক্তব্য দেবেন বলে জানা গেছে।