পঞ্চম পর্ব
রবির জীবনে মৃত্যুশোক

মোহিতচন্দ্র সেন
রবীন্দ্রনাথের প্রিয় বন্ধু।
মৃত্যু : ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৩১৩ বঙ্গাব্দ, ৯ জানুয়ারি ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, মাত্র সাড়ে পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে।
মোহিতচন্দ্র সেন রবীন্দ্রনাথের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। তাঁর অকালমৃত্যুতে রবীন্দ্রনাথ প্রচণ্ডভাবে আহত হন। মৃত্যুর দুই দিন পর, অর্থাৎ ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৩১৩ বঙ্গাব্দ, ১১ জানুয়ারি ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার বন্ধুপত্নী সুশীলা সেনকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি বন্ধুপত্নীকে ‘কল্যাণীয়াসু’ সম্বোধন করে লেখেন :
‘আজ প্রমথ বাবুর [প্রমথলাল সেন] পত্রে মর্ম্মান্তিক সংবাদ শুনিয়া অবধি আমার ব্যথিত চিত্র দুইটি অনাথা বালিকা ও তাহাদের শোকার্ত্ত মাতার প্রতি ধাবিত হইতেছে। সংসারে নিদারুণ শোকের পরিচয় পাইয়াছি সেইজন্য নিষ্ফল সান্ত্বনাবাক্য প্রয়োগের চেষ্টা মাত্র করি না, ঈশ্বর যথাকালে শান্তি বিধান করিয়া অসহ্য দুঃখকে নিজের হস্তে সার্থক করিবেন এই আমার প্রার্থনা।’
বন্ধুবিয়োগে রবীন্দ্রনাথ একটি শোক-প্রবন্ধও লেখেন। প্রবন্ধটি তৎকালীন ‘বঙ্গদর্শন’-এর শ্রাবণ-সংখ্যায় ‘মোহিতচন্দ্র সেন’ নামে প্রকাশিত হয়। এর পর বিচিত্র প্রবন্ধ অধ্যায়ে ‘বন্ধুস্মৃতি’ বিভাগে এটি সংকলিত হয়।
শমীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রবীন্দ্রনাথের ছোট ছেলে।
মৃত্যু : ৭ অগ্রহায়ণ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ, ২৩ নভেম্বর ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, শেষরাতে। ১১ বছর বয়সে কলেরায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট ছেলে শমীন্দ্রনাথ মারা যান কলেরায়। রবীন্দ্রনাথের প্রিয় বন্ধু শ্রীশচন্দ্র মজুমদারের ছেলে সরোজচন্দ্র মজুমদারের (ভোলা) সাথে শান্তিনিকেতনে পুজোর ছুটি হলে শমীন্দ্রনাথ ছুটি কাটাতে বন্ধু সরোজের মামার বাড়ি মুঙ্গেরে (বিহার রাজ্যে) বেড়াতে যান। মাসখানেক পর খবর আসে শমীন্দ্রনাথের কলেরা ধরা পড়েছে। একজন চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ মুঙ্গের রওনা হলেন। অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। চলে ছেলেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা। এমনকি নিজের হোমিওপ্যাথি জ্ঞান দিয়ে কিছু হোমিও ওষুধও প্রয়োগ করলেন রবীন্দ্রনাথ। কখনও একটু ভালোর দিকে, কখনও বা অবনতির মাধ্যমে চলতে থাকে। একসময় সব চিকিৎসার ঊর্ধ্বে উঠে শমীন্দ্রনাথ মারা যান।
শমীন্দ্রের প্রসঙ্গে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শমীন্দ্র পিতার বড়ই প্রিয় ছিল, আকৃতিতে পিতার অনুরূপ। এই শোক কবির ভীষণভাবে লাগিয়াছিল, কিন্তু শোকের প্রকাশ কোথাও নাই। তাঁহার (রবীন্দ্রনাথ) আধ্যাত্মিক জীবনের একটি বড় বাঁক ফিরিল। ইহার পর হইতে কবির নিরুদ্ধ শোক আধ্যাত্মিক সান্ত্বনারূপে নবকলেবরে অল্পকাল মধ্যে সাহিত্যে মুক্তি লাভ করিল।’ ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে বিলাতপ্রবাসী বন্ধু জগদীশচন্দ্রের পত্নী অবলা দেবীকে একটি চিঠিতে লেখেন, ‘আপনারা চলে যাওয়ার পরে অল্প দিনের মধ্যে খুব একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এসেছি। এই বিপ্লবটাকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে দেখতে গেলে এটা যত বড় উৎকট আকার ধারণ করে, জীবনের সমগ্রের সঙ্গে মিলে মিশে এটা তত প্রচণ্ড নয়। যে ব্যাপারটা কল্পনায় নিতান্তই দারুণ এবং অসঙ্গত বোধ হয় সেটাও ঘটনায় এমনভাবে আপনার স্থান গ্রহণ করে যেন তার মধ্যে অপ্রত্যাশিত কিছুই নেই। সেই জন্যে সমস্ত আঘাত কাটিয়ে, জীবনযাত্রা যেমন চলছিল তেমনই চলছে; হয়ত একটা কিছু পরিবর্ত্তন ঘটেছে, কিন্তু সে পরিবর্ত্তন উপর থেকে দেখা যায় না, সে পরিবর্ত্তন নিজের চোখেও হয়ত সম্পূর্ণভাবে লক্ষ্যগোচর হতে পারে না।’
১৯ অগ্রহায়ণ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ অন্য এক চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ কাদম্বিনী দত্তকে লেখেন : ‘ঈশ্বর আমাকে বেদনা দিয়াছেন কিন্তু তিনি ত আমাকে পরিত্যাগ করেন নাই, তিনি হরণও করিয়াছেন পূরণও করিবেন। আমি শোক করিব না, আমার জন্যও শোক করিয়ো না।’ শোক কিছুদিনের মধ্যেই ‘প্রার্থনা’য় রূপান্তরিত হয়েছে। ২৭ অগ্রহায়ণ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ শিলাইদহে গান লিখেছেন : ‘অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে’ সবার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে মোহের বন্ধদশা থেকে মুক্ত হওয়ার এক সাধনার শুরু এখানে। সেই গানে তিনি লেখেন :
‘জাগ্রত করো, উদ্যত করো, নির্ভয় করো হে।
মঙ্গল করো, নিরলস নিঃসংশয় করো হে॥
যুক্ত করো হে সবার সঙ্গে, মুক্ত করো হে বন্ধ॥
সঞ্চার করো হে সবার সঙ্গে, মুক্ত করো হে বন্ধ।
সঞ্চার করো সকল কর্মে শান্ত তোমার ছন্দ।
চরণপদ্মে মম চিত নিস্পন্দিত করো হে।
নন্দিত করো, নন্দিত করো, নন্দিত করো হে ॥’
অন্যদিকে জগদীশচন্দ্র বসুর কাছ থেকে সান্ত্বনা-পত্রের উত্তরে ২৩ পৌষ ১৩১৪ বঙ্গাব্দে লেখা এক চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ লেখেন :
‘আমাদের চারিদিকেই এত দুঃখ এত অভাব এত অপমান পড়িয়া আছে যে নিজের শোক লইয়া অভিভূত হইয়া এবং নিজেকেই বিশেষরূপ দুর্ভাগ্য কল্পনা করিয়া পড়িয়া থাকিতে আমার লজ্জা হয়। আমি যখনই আমাদের দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের কথা ভাবিয়া দেখি তখনি আমাকে আমার নিজের দুঃখতাপ হইতে টানিয়া বাহির করিয়া আনে। আমাদের অসহ্য দুর্দ্দশার মূর্ত্তি ঘরে ও বাহিরে আজকাল এমনি সুপরিস্ফুট হইয়া দেখা দিয়াছে যে নিজের ব্যক্তিগত ক্ষতি লইয়া পড়িয়া থাকিবার সময় আমাদের আর নাই।’
বহুকাল পরে রবীন্দ্রনাথ তাঁর দৌহিত্র নীতিন্দ্রনাথের মৃত্যুতে কন্যা মীরা দেবীকে সান্ত্বনা দিয়ে ১২ ভাদ্র ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ, ২৮ আগস্ট ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার যে চিঠি লিখেছেন, তার মধ্যে প্রসঙ্গক্রমে শমীন্দ্রনাথের মৃত্যুর কথা তিনি স্মরণ করেছেন :
‘যে রাত্রে শমী গিয়াছিল সে রাত্রে সমস্ত মন দিয়ে বলেছিলুম বিরাট বিশ্বসভার মধ্যে তার অবাধ গতি হোক আমার শোক তাকে একটুও যেন পিছনে না টানে।’
শিলাইদহ, নদিয়ায় অবস্থানকালে ৬ শ্রাবণ ১৩১৫ বঙ্গাব্দে কন্যা মীরার স্বামী নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে তাঁর পিতার মৃত্যুতে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে লেখা এক চিঠির শুরুতেও রবীন্দ্রনাথ শমীন্দ্রের মৃত্যুর স্মৃতিচারণা করেন। মৃত্যুকে মহান হিসেবে দেখে তিনি সন্তানের মৃত্যুর পর কীভাবে সান্ত্বনা সঞ্চয় করেছিলেন তা বর্ণনা করেন। সেই চিঠিতে তিনি লেখেন:
‘শমীর যখন হঠাৎ মৃত্যু ঘটিল তখন সে সংবাদ বিদেশে রথীকে না দিবার জন্য অনেকে আমাকে অনুরোধ করিয়াছিল। কিন্তু সংসারে ঈশ্বর যখন আমাদিগকে দুঃখ দেন তখন সম্মুখে দাঁড়াইয়া তাহাকে বহন করিতেই হইবে, রথীর ভাগে যে দুঃখ পড়িয়াছে যতই কষ্ট হউক রথী তাহাকে শিরোধার্য্য করিয়া লইবে ইহাই কর্ত্তব্য জানিয়া শমীর মৃত্যুর পরেই আমি তাহাকে সংবাদ দিতে বিলম্ব করি নাই। সেই আঘাত হৃদয়ে গ্রহণ করিয়া যদি তাহার কোনো মঙ্গল না ঘটিয়া থাকে, যদি তাহার জীবনের ধারা পূর্ব্বাপেক্ষা গভীরতর পূর্ণতর না হইয়া থাকে তবে যে দুর্ভাগ্য, কিন্তু মহৎ দুঃখ যখন ঈশ্বর প্রেরণ করেন তখন অকুণ্ঠিত চিত্তে পৌরুষের সহিত তাহাকে অভ্যর্থনা করিয়া লইতেই হইবে।’
দুজন ইংরেজ নারী
উত্তর বিহারের শহর মজফফরপুরের ব্যারিস্টার কেনেডির স্ত্রী ও মেয়ে।
মৃত্যু : ১৭ বৈশাখ ১৩১৫ বঙ্গাব্দ, ৩০ এপ্রিল ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ। বোমার আঘাতে নিহত।
কিংসফোর্ড নামে কলকাতার জনৈক ম্যাজিস্ট্রেটকে হত্যা করতে গিয়ে ভুল করে নিরপরাধ দুজন নারীকে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্লকুমার চাকী হত্যা করেন। রবীন্দ্রনাথ যে কেবল আত্মীয়-বন্ধুদের মৃত্যুতেই শোক প্রকাশ করেছেন, তা নয়। একজন স্পর্শকাতর সামাজিক মানুষ হিসেবে, মানবিকতার প্রশ্নে তিনি বিচলিত হয়েছেন।
১৯ বৈশাখ ১৩১৫ বঙ্গাব্দে কালীমোহন ঘোষকে লিখিত এক পত্রে এ অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে রবীন্দ্রনাথের শোকের সাথে সাথে ক্ষোভের প্রকাশ পাওয়া যায় : ‘মজঃফরপুরে বম্ব ফেলিয়া দুইটি ইংরেজ স্ত্রীলোককে হত্যা করা হইয়াছে শুনিয়া আমার চিত্ত অত্যন্ত পীড়িত হইয়া আছে। এইরূপ অধর্ম্ম ও কাপুরুষতার সাহায্যে যাহারা দেশকে বড় করিতে চায় তাহাদের কিসে চৈতন্য হইবে জানি না। কিন্তু তাহারা সমস্ত দেশকে বিষয় দুঃখে ফেলিবে। ধর্ম্মের মুখ চাহিয়া দুঃখ সহা যায় কিন্তু এমন পাপের বোঝা দেশ কি করিয়া বহন করিবে? ঈশ্বর দেশের কাজে সর্ব্বদা তোমাদের অন্তঃকরণে ধর্ম্মবুদ্ধি দিন, শুভবুদ্ধি দিন, তোমরা অসহিষ্ণু হইয়া কোনোদিন যেন অন্যায় না কর, উপস্থিত ফললাভের প্রলোভনে সত্য হইতে বিচ্যুত না হও। জগতে এমন কিছুই থাকিতে পারে না যাহাকে লাভ করিবার চেষ্টায় ধর্ম্মকে বিসর্জ্জন দিতে হয়।’
শ্রীশচন্দ্র মজুমদার
রবীন্দ্রনাথের বন্ধু।
মৃত্যু : ২৩ কার্তিক ১৩১৫ বঙ্গাব্দ, ৮ নভেম্বর ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৮ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।
রবীন্দ্রনাথের এই বন্ধুটির প্রসঙ্গে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় উল্লেখ করেন, ‘... একটি দুঃসংবাদ আসিল; দুমকায় তাঁহার বন্ধু শ্রীশচন্দ্র মজুমদার অকস্মাৎ হৃদরোগে মারা গিয়াছেন (২৩ কার্তিক ১৩১৫ বঙ্গাব্দ)। শ্রীশচন্দের সহিত কবির ঘনিষ্ঠতা সন্ধ্যা-সংগীতের যুগ হইতে; তার পর গিরিধিতে তিনি যখন ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন অফিসার, তখন কবি প্রায়ই সেখানে যাইতেন। তাঁহার জ্যেষ্ঠপুত্র সন্তোষচন্দ্র রথীন্দ্রের সতীর্থ। মধ্যমপুত্র সরোজ ব্রহ্মচর্যাশ্রমের ছাত্র, কবির কনিষ্ঠপুত্র শমীন্দ্রের বন্ধু। সর্বকনিষ্ঠ সর্বেশ বা সবি শিশুছাত্র। শ্রীশচন্দ্রের পরিবার বৃহৎ, অনেকগুলি কন্যা তখনো অনূঢ়া। পিতার অকালমৃত্যুতে সন্তোষচন্দ্রকে যে কী কঠিন সংগ্রামের মধ্যে পড়িতে হইবে তাহা নিশ্চয়ই কবিকে ভাবিত করিয়াছিল।’
এ প্রসঙ্গে প্রশান্তকুমার পাল তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন : দীর্ঘদিনের বন্ধু শ্রীশচন্দ্র মজুমদার [৩০ আশ্বিন ১৩১৫ বঙ্গাব্দ, ১৬ অক্টোবর ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ] হৃদরোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন; সুস্থ হয়ে ওঠার মুখে ২৩ কার্তিক ১৩১৫ বঙ্গাব্দ [রবিবার, ৮ নভেম্বর ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ] রাসপূর্ণিমার রাত্রে মাত্র ৪৮ বৎসর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র সরোজচন্দ্র [ভোলা] তখন ব্রহ্মচর্যাশ্রমের ছাত্র, জ্যেষ্ঠপুত্র সন্তোষচন্দ্র কৃষি ও গোপালন-বিদ্যা শিক্ষার জন্য আমেরিকায়। রবীন্দ্রনাথকে লেখা উল্লিখিত পত্রে এই মৃত্যুতে রবীন্দ্রনাথের প্রতিক্রিয়া নিশ্চয়ই ব্যক্ত হয়েছিল, কিন্তু পত্রটি পাওয়া যায়নি। সন্তোষচন্দ্রকেও লিখেছিলেন, সেকথা, ৩০ কার্তিক ১৩১৫ বঙ্গাব্দ [রবিবার, ১৫ নভেম্বর ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ] লিখেছেন মনোরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে :
‘হঠাৎ হৃদরোগে সন্তোষের বাপ মারা গেছেন হয়ত সংবাদপত্রে সে খবর পাইয়া থাকিবেন। তাঁহার পরিবার এবং সন্তোষের জন্য মন উৎকণ্ঠিত হইয়া আছে। তিনি ত ঋণ ছাড়া আর কিছু জমাইয়া যাইতে পারেন নাই, আর রাখিয়া গিয়াছেন চারটি অবিবাহিত কন্যা। সন্তোষ আপাততঃ আমেরিকাতেই যাহাতে উপার্জ্জনে প্রবৃত্ত হয় তাহাকে সেইরূপ পরামর্শ দিয়াই পত্র লিখিয়াছি। সেখানে সে চেষ্টা করিলে এখনি সে মাসিক ৩০০। ৪০০ টাকা উপার্জ্জন করিতে পারে। আমার কনিষ্ঠ জামাতা নগেন্দ্র কলেজের ছুটির তিন মাসের মধ্যে ১৫০০ টাকা জমাইয়া তাহার বাড়িতে পাঠাইয়া দিয়াছে।’
রবীন্দ্রনাথ তাঁর বন্ধু শ্রীশচন্দ্রের মৃত্যুর পর বন্ধু-পরিবারের সমগ্র ভার গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পুত্র-কন্যাদের সন্তান-স্নেহেই প্রতিপালন করে জীবন প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন।
(চলবে)