মিয়ানমারে পরিস্থিতি না বদলালে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের
মিয়ানমারে গত নভেম্বরের নির্বাচনের পর আজ সোমবার প্রথম পার্লামেন্টের অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তার আগেই আজ ভোরের দিকে দেশটির নেত্রী অং সান সুচি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের আটক করে সেনাবাহিনী। দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীদেরও আটক করে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর রাস্তায় সেনা নেমেছে। সরকারি টিভিতে সম্প্রচার বন্ধ। ইন্টারনেট পরিষেবার অবস্থাও খারাপ। রোববার দিবাগত রাত ৩টার পর থেকে তা ভালো করে কাজ করছে না।
এদিকে মিয়ানমারে বিরাজমান পরিস্থিতির খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমারের বিরাজমান পরিস্থিতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি। তিনি বলেন, ‘বার্মিজ (মিয়ারমারের বার্মা নামেও পরিচিত) সেনাবাহিনী দেশটির গণতান্ত্রিক উত্তরণকে বানচাল করতে যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।’
‘মিয়ানমারে সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন অথবা দেশটির গণতান্ত্রিক উত্তরণে বাধা দেওয়ার যেকোনো চেষ্টার বিরোধিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। যদি সবকিছু আগের অবস্থায় ফিরে না যায়, তাহলে এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র,’ যোগ করেন জেন সাকি।
এ ছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে মিয়ানমারে বিরাজমান পরিস্থিতির বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান জেন সাকি।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিষয়ে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তোলে। সেনাবাহিনী নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে আজ সোমবার বসতে যাওয়া সংসদ অধিবেশন বাতিলের দাবি জানায়।
অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি নভেম্বরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পায়। সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধী জোট নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তোলে। তাদের দাবি, নির্বাচনে ভোটার তালিকায় ৮৬ লাখ গরমিল পাওয়া গেছে।
নির্বাচনে এনএলডি পার্টি ৮৩ শতাংশ আসন পায়। ২০১১ সালে সামরিক শাসন শেষ হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন ছিল। তবে সামরিক বাহিনী নির্বাচনের ফলকে বাধাগ্রস্ত করে। তারা সুপ্রিম কোর্টে প্রেসিডেন্ট ও ইলেকটোরাল কমিশনের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।