অ্যামাজনের সিইও পদ ছাড়ছেন জেফ বেজোস
অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদ ছাড়ছেন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। এ বছরের শেষদিকে সিইও পদ ছেড়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেবেন তিনি। জেফ বেজোস গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
অ্যামাজনে জেফ বেজোসের উত্তরসূরী হবেন অ্যান্ডি জেসি। বর্তমানে তিনি অ্যামাজনের ক্লাউড ব্যবসার প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।
বেজোস বিবৃতিতে বলেছেন, ‘উদ্ভাবনের কারণেই অ্যামাজন আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে... আমাদের আর্থিক ফলাফলের দিকে যদি তাকান, তাহলে যা দেখছেন, তা আসলে দীর্ঘ সময়ের উদ্ভাবনমূলক কাজের সামগ্রিক ফলাফল।’
নতুন দায়িত্ব নিয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে মনোযোগ দেবেন, তা-ও জানিয়েছেন জেফ বেজোস। অ্যামাজনের ওয়েবসাইটে কর্মীদের উদ্দেশে বেজোস বলেছেন, নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি অ্যামাজনের গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকবেন। তবে এর পাশাপাশি বেজোস ডে ওয়ান ফান্ড, বেজোস আর্থ ফান্ড, ব্লু অরিজিন, দ্য ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন দিকে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এ ছাড়া জেফ বেজোস স্পষ্ট জানিয়েছেন, প্রধান নির্বাহীর পদ ছাড়লেও এখনই অবসরের চিন্তা তাঁর মাথায় নেই।
বেজোস বলেন, ‘এই মুহূর্তে অ্যামাজন তার সেরা উদ্ভাবনী অবস্থানে আছে। আর এ কারণে এখনই (পদ পরিবর্তনের) পালাবদলের সেরা সময়।’
‘আমি এতটা শক্তি এর আগে অনুভব করিনি, এবং এটা (সিইও পদ ছাড়া) অবসর গ্রহণ করা নয়,’ যোগ করেন বেজোস।
১৯৯৪ সালে নিজের গ্যারাজে আমাজন প্রতিষ্ঠা করেন জেফ বেজোস। অনলাইনে পণ্য বিক্রয়ের পাশাপাশি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সংস্থা অ্যামাজনের টিভি ও মিউজিক স্ট্রিমিং, দৈনন্দিন জিনিসপত্র, ক্লাউড কম্পিউটিং, রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ বিভিন্ন ব্যবসা বেড়েছে।
ফোর্বসের হিসাবে জোফ বেজোসের সম্পদের বর্তমান মূল্য ১৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।
তবে সাফল্যের পাশাপাশি, সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে অ্যামাজনকে। ওয়্যার হাউসে কাজের পরিবেশ নিয়ে অ্যামাজনের সমালোচনা করে কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
করোনা মহামারির সময়ে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত পণ্যের দোকানপাট বন্ধ থাকায় মানুষ হোম ডেলিভারির দিকে ঝুঁকেছে। এর ফলে করোনাকালে রেকর্ড লাভ গুণেছে অ্যামাজন।
গত বছরের কেবল শেষ ত্রৈমাসিকেই অ্যামাজনের বিক্রি এর আগের বছরের তুলনায় বেড়ে দাঁড়ায় ১২ হাজার ৫৫৬ কোটি মার্কিন ডলারে। যা ২০১৯ সালের একই সময়ে ছিল আট হাজার ৭৪৪ কোটি মার্কিন ডলার।
আর, গত বছর অ্যামাজনের মোট বিক্রি হয়েছে ৩৮ হাজার ৬১০ কোটি মার্কিন ডলারের। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে যা ছিল ২৮ হাজার ৫০ কোটি মার্কিন ডলার। সে হিসাবে ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর অ্যামাজনের মোট বিক্রি বেড়েছে ৩৮ শতাংশ।