রোজা রাখার পর কী খাবেন, কী খাবেন না
এখন পবিত্র মাহে রমজান। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে জানব রোজা রাখার পর কী খেলে শরীরের জন্য উপকার হবে আর কী খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
এনটিভির নিয়মিত এক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ডা. শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা ১২ ঘণ্টা বলেন বা ১৩ ঘণ্টা উপবাস থাকি। সেহরির পরে এই যে উপবাস বলব না ফাস্টিং বলব, যেটাই বলেন, এ ক্ষেত্রে আমরা কোনো কিছু খাচ্ছি না। তাহলে আমার খাবারের ভেতরে কী কী উপাদান আছে—প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, পানি, মিনারেলস এবং ভিটামিনস। এখানে প্রোটিন যে খাবার আছে, প্রোটিনটা আমরা যখন খাব, আমরা দেখব যে আমাদের প্রোটিনের অবস্থা কী রকম আছে। একটু ফ্যাটও খেতে হবে। তারপর কার্বোহাইড্রেটও খেতে হবে। সবই খেতে হবে। একটি ব্যালেন্স ডায়েট বা সুষম খাবার খেতে হবে।
এখন গ্রীষ্মকাল। কী পরিমাণ পানি খেতে হবে? ডা. শামীম আহমেদ বলেন, এই যে রোজার সময়টা যাচ্ছে, এখন যেহেতু গরমকাল, এখানে কিন্তু পানির পরিমাণটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ২৪ ঘণ্টায় কতটুকু আমরা বলব, যদি আপনার দুই লিটার পানি খেতে হয়, সেটা দুই ভাগে খেতে হবে। একটা ইফতারের পরে খেতে হবে, আরেকটা সেহরির সময়। এটাকে আপনি ভাগ করে নেবেন। ভাগ করে আপনি যেভাবে খান। আপনি যখন রোজা থাকেন, বিকেলে যখন প্রস্রাব করেন... প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়, এটা কিন্তু কিডনির ট্রিমেন্ডাস পাওয়ার। যদি আপনার শরীরে পানি কম থাকে, সেটা অ্যাবজর্বড করে দেয়। কিডনির ট্রিমেন্ডাস পাওয়ারটা কী। আপনি যদি পাঁচ থেকে ছয় লিটারও পানি খান, যদি কিডনি ভালো থাকে, এটা কিন্তু ফেলে দেবে। অর্থাৎ আপনার প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে যাবে। আমরা বলি না যে পাঁচ-ছয় লিটার পানি খেতে হবে। কারণ, এটা খাওয়াটা হলো কাজ করতে গেলে তার নিশ্চয়ই একটা এনার্জি লাগবে। সে এনার্জিগুলো... কিডনিতে এনার্জিগুলো বেশি চলে যাবে। আমরা সে জন্য বলি দুই থেকে তিন লিটার পানি খেতে হবে।
কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত? ডা. শামীম আহমেদ বলেন, আমরা প্রথমে বলি, কিডনি রোগী যাঁরা আছেন, তাঁরা রোজা রাখতে পারবেন কি না। কিডনি রোগের যাঁরা স্টেজ থ্রি-ফোর, এই একটা টার্ম আছে, কিন্তু অনেকের বোঝার জন্য বলি যে কিডনির যখন কার্যক্ষমতা ৫০ বা ৬০ বা ৭০ ভাগ কাজ না করে, তাহলেও রোজা রাখতে পারবেন। যদি আপনার এটা ১৫ ভাগের নিচে চলে যায়, সে ক্ষেত্রে রোজা রাখাটা নিষেধ করা হয়। কারণ, তখন আপনার বডির যে মেটাবলিজম বা তার যে ওষুধ খাওয়ার প্রক্রিয়া, সে ক্ষেত্রে আপনি ভালো থাকতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রোটিনজাতীয় খাবার কম খেতে হবে। প্রোটিনজাতীয় খাবার মাছ-মাংস-দুধ কম খেতে হবে। আরেকটা জিনিস হলো, রোজার সময় শুধু কিডনির রোগ নয়, যাঁরা আছেন, তাঁরা হয় কি, রোজা রাখার পরে ভাজাপোড়া খেতে পছন্দ করেন। তেলের খাবার পছন্দ করেন। সেটা পরিহার করা উচিত। মানে তেলে ভাজা, ফ্যাটজাতীয় জিনিস; এগুলো খেলে রোজা থাকার পরে বদহজম হতে পারে এবং বদহজম হওয়ার পরে আপনার একটা গুরুপাক... এই যে খাওয়ার ফলে আপনার হয়তো গ্যাস্ট্রিকের আলসার বেড়ে যেতে পারে। তখন আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন। বেশি অসুস্থ হলে আপনার রোজাটা ভেঙে যেতে পারে। বা আপনি রোজা রাখতে পারলেন না। সেজন্য পরিমিত খেতে হবে। পারতপক্ষে চর্বিজাতীয় খাবার, মসলাজাতীয় খাবার; এগুলো পরিহার করতে হবে। তাহলে কী করা উচিত। যেটা খাওয়া উচিত, টাটকা ফলমূল খাওয়া উচিত এবং আপনি শরবত খেতে পারেন। সেটা দই বা চিড়ার শরবত খেতে পারেন। সেটা পরিমিত খেলেন। একটু খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করতে পারেন। এগুলো খেলে আপনার ভালো হবে। বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটিতে ক্লিক করুন।