বিদেশিদের সহায়তাকারী আফগানদের খুঁজছে তালেবান যোদ্ধারা
প্রায় দুই দশক ধরে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তানে অবস্থানের সময় স্থানীয় নাগরিকেরা নানাভাবে তাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। সেই আফগানদের খুঁজছে তালেবান যোদ্ধারা। এ জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এমনকি দেশ ছাড়ার উদ্দেশে রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জড়ো হওয়া মানুষের মধ্যেও বিদেশি সহায়তাকারীদের খোঁজা হচ্ছে।
এমনই একজন হলেন নওরোজ আলী। তিনি আফগানিস্তানে নিউজিল্যান্ড বাহিনীকে সহায়তা করেছিলেন। বর্তমানে নওরোজ আলী কাবুলে তাঁর পরিবারের সঙ্গে আত্মগোপন করে আছেন।
নওরোজ আলী জানান, তিনি ভয়ে আছেন। তিনি অন্ধকারে গুলির শব্দ শুনতে পান। এমনকি রাতে ঘুমাতেও পারেন না। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
‘রাতের বেলা আমি ভয়ে কাঁপতে থাকি। আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমি যত বেশি দিন এখানে কাটাচ্ছি, ততই চিন্তিত হয়ে পড়ছি। তালেবানরা জোট বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা লোকদের সন্ধান করতে শুরু করেছে,’ বলেন নওরোজ আলী।
আফগানিস্তানে নিউজিল্যান্ড বাহিনীকে সহায়তাকারী ৩৭ জনের একজন হলেন নওরোজ আলী। তিনি মনে করেন, তালেবান তাঁকে ধরতে পারলে তিনি নির্যাতন কিংবা মৃত্যুর মুখোমুখি হতে পারেন।
এদিকে চলতি সপ্তাহে নিউজিল্যান্ড সরকার বলেছে, নিউজিল্যান্ড বাহিনীর জন্য কাজ করা আফগানদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একটি সি-১৩০ প্রতিরক্ষা বিমান বৃহস্পতিবার সকালে সাহায্যের জন্য ছেড়ে গেছে।
কাবুল থেকে নওরোজ আলী টেলিফোন বলেন, তিনি এখন যে এলাকায় আছেন তা সম্পূর্ণরূপে তালেবানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সর্বত্র তালেবান চেকপোস্ট বসানো আছে।
নওরোজ আলী বলেন, ‘তালেবানদের টহলদল এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় আসা-যাওয়া করছে…আপনি মহিলা এবং মেয়েদের বাইরে যেতে দেখবেন না… আমিও বাইরে যেতে পারছি না, কারণ এই খবর শুনে যে, জোট বাহিনীকে সাহায্যকারীদের অনুসন্ধান করছে তালেবান, যাদের তারা অনুসন্ধান করছে তাদের হত্যাও করা হতে পারে।’
নওরোজ আলী আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশে নিউজিল্যান্ড বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন, যেখানে নিউজিল্যান্ডের প্রভিন্সিয়াল রিকনস্ট্রাকশন টিম (পিআরটি) নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব ছিল। তিনি কিউই ঘাঁটিতে একজন দোভাষী এবং একটি গেট সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি গার্ডিয়ানকে নিউজিল্যান্ড এবং সহযোগী দখলদার বাহিনীর সঙ্গে তাঁর কাজ প্রমাণ করার জন্য একাধিক নথিও সরবরাহ করেছেন।