ঐতিহাসিক করপোরেট কর আরোপে সম্মত জি-২০ নেতারা
বহুজাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে অন্তত ১৫ শতাংশ করপোরেট কর আদায়ের বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশের নেতারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়।
ইতালির রোমে জি-২০ জোটের সম্মেলনে পৃথিবীর বড় বড় কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে করপোরেট কর আদায়ের বিষয়ে সবার সম্মতি মিলেছে। এর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড মহামারি বিষয়ক আলোচনাও প্রাধান্য পায় এবারের সম্মেলনে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে এ করারোপের প্রস্তাব আনে। ২০২৩ সাল থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হতে পারে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ফলে পৃথিবীর সব দেশে বড় বড় কোম্পানিগুলো ন্যূনতম ১৫ শতাংশ কর দিতে বাধ্য হবে।
করপোরেট করারোপের এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং এসবের কর্মীরা এতে উপকৃত হবেন। যদিও এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বড় বড় কোম্পানিগুলোর কিছুটা বেশি কর দেওয়া লাগতে পারে।’
অন্যদিকে, এবারের জি-২০ সম্মেলনে জলবায়ু বিষয়ক একটি ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছ রয়টার্স। এর খসড়ায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। যদিও এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পৃথিবীর সব দেশের অর্থবহ ও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।
জি-২০ সম্মেলনের পরই যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেবেন বিশ্বনেতারা। এ কারণে চলমান জি-২০ সম্মেলনকে জলবায়ু ইস্যুতেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
জি-২০ নেতাদের এবারের খসড়ায় অন্তত ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন অর্থাৎ ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার তহবিল সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। এ অর্থ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যবহার করার কথা। যদিও ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র মিলে গ্রুপ অব টোয়েন্টি অর্থাৎ জি-২০ জোট কাজ করে থাকে।
এবারের সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন। সশরীরে অংশ নেননি জাপানের প্রধানমন্ত্রীও। এ ছাড়া সব দেশের নেতারা সশরীরে ইতালির রোমে উপস্থিত ছিলেন।