আমিরকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ওয়াকার
পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন মোহাম্মদ আমির। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরানোর উদ্যোগও নিয়েছে। আসন্ন নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য ঘোষিত প্রাথমিক দলে রাখা হয়েছে আমিরকে। এই প্রতিভাবান বাঁ-হাতি পেসারকে দলে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের কোচ ওয়াকার ইউনিস। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, পাঁচ বছর জীবন থেকে মুছে গেলেও ২৩ বছর বয়সী আমিরের এখনো জাতীয় দলকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে।
২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আমির। তবে তার আগে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের কিংবদন্তি বাঁ-হাতি পেসার ওয়াসিম আকরামের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল তাঁকে। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর এক বছরের মধ্যেই নিয়েছিলেন ৫১টি টেস্ট ও ২৫টি ওয়ানডে উইকেট।
গত এপ্রিলে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার পর থেকেও আমিরের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কায়দে আযম ট্রফির বাছাইপর্বের চার ম্যাচে ৩৪ উইকেট নেওয়ার পর মূল প্রতিযোগিতায় নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট। এরপর বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে প্রমাণ করেছেন নিষেধাজ্ঞা তাঁর আগুন ঝরানো বোলিংকে ম্লান করে দিতে পারেনি।
আর তাই ওয়াকারের ধারণা, আমির এখনো পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য অনেক অবদান রাখতে পারবেন। বার্তাসংস্থা এএফপির সঙ্গে কথোপকথনে পাকিস্তানের সাবেক গতি-তারকার মন্তব্য, ‘আমি তার প্রত্যাবর্তন নিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত। আমির সঠিক পথেই আছে। ফিটনেস ক্যাম্পে সে কঠোর পরিশ্রম করছে। আমার বিশ্বাস এই ছেলে পাকিস্তান ক্রিকেটকে অনেক কিছু দিতে পারবে।’
আমিরের ফেরা নিয়ে অবশ্য বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁকে দলে রাখায় অনুশীলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক আজহার আলী ও অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ। তবে এই ঝামেলা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। আমিরকে মেনে নিয়েই অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন আজহার-হাফিজ। পাকিস্তানের কোচ ওয়াকারও আমিরকে সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ‘২০১০ সালে আমির যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় ফিরতে হয়তো তার কিছুটা সময় লাগতে পারে। আমাদের তার ওপর কোনো রকম চাপ সৃষ্টি না করাই উচিত। বরং সেরা ছন্দে ফিরতে সব রকম সহযোগিতা করা উচিত তাকে।’
২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে টাকার বিনিময়ে ইচ্ছে করে নো বল করার দায়ে শাস্তি হয়েছিল আমিরের। একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় পাকিস্তানের সে সময়ের অধিনায়ক সালমান বাট এবং আরেক পেসার মোহাম্মদ আসিফকেও শাস্তি পেতে হয়েছিল। এমনকি জেলেও যেতে হয়েছিল তিনজনকে। তবে বয়স কম হওয়ায় আমিরের জায়গা হয়েছিল কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে।