‘মানুষের চেয়েও কি আইপিএল বড়?’
দুই বছর ধরেই তীব্র খরা চলছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য মহারাষ্ট্রে। গত বছর খরার কারণে আত্মহত্যা করেছিলেন তিন হাজারেরও বেশি কৃষক। এখনো পানির অভাবে হাহাকার চলছে মহারাষ্ট্রে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ, আইপিএল আয়োজনকে পানির অপচয় হিসেবেই দেখছেন মহারাষ্ট্রের বিচারকরা। মহারাষ্ট্র থেকে আইপিএলের ম্যাচগুলো সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে মুম্বাই হাইকোর্টের পক্ষ থেকে।
আগামী শনিবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে আইপিএলের নবম আসর। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে উদ্বোধনী ম্যাচ। মহারাষ্ট্রের তিনটি শহর; মুম্বাই, পুনে ও নাগপুরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আইপিএলের ২০টি ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোর জন্য মাঠ ও পিচ প্রস্তুত করার জন্য ব্যবহার করতে হবে বিপুল পরিমাণ পানি। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সাতটি ম্যাচ আয়োজনের জন্য ৪০ লাখ লিটারেরও বেশি পানি প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। তীব্র খরায় ধুঁকতে থাকা অঞ্চলের মানুষদের কাছে এটা শুধুই অপচয়। মুম্বাইয়ের এক বিচারক ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছেন, ‘কীভাবে এত পানি নষ্ট করা যায়? মানুষের চেয়েও কি আইপিএল বড়? আপনারা কীভাবে এত উদাসীন হতে পারেন?’
আইপিএল আয়োজনের জন্য এই পানি অপচয়ের বিরুদ্ধে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল একটি এনজিওর পক্ষ থেকে। সেই পিটিশনের শুনানির সময় আইপিএল আয়োজনের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিচারকরা। ম্যাচগুলো মহারাষ্ট্র থেকে অন্য কোথাও সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। রাজ্য সরকারগুলো এই সমস্যা নিরসনে কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, তাও জানতে চেয়েছেন মুম্বাইয়ের আদালত।
আইপিএলের সভাপতি রাজীব শুক্লা অবশ্য পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ীই ম্যাচগুলো আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ জন্য মহারাষ্ট্রের কৃষকদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন শুক্লা, ‘খরা ও পানির বিষয়ে আমরা মহারাষ্ট্রের কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা করতে রাজি আছি। যদি মহারাষ্ট্র সরকার আমাদের কোনো প্রস্তাব দেয়, তাহলে আমরা সবাই মিলে সে বিষয়ে চিন্তা করব।’