ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে এগিয়ে যারা

ব্যালন ডি‘অরে দুই কিংবদন্তি লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর যুগের অবসান হয়েছে। গত আসরে এই পুরস্কার উঠেছে ম্যানসিটি তারকা রদ্রির হাতে। ২০২৫ সালে বহুল প্রতীক্ষিত ব্যালন ডি’অর কার হাতে উঠতে যাচ্ছে তা জানা যাবে আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে। প্যারিসের থিয়েটার দ্যু শাতলেতে জমকালো আয়োজনে সর্বশেষ মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়ের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
২০২৪-২৫ মৌসুমের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে নির্বাচিত এই পুরস্কারের দৌড়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড়। এবারের ব্যালন ডি’অরের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ১৩ জুলাই পর্যন্ত। এই সময়ের মাঝে পারফরম্যান্সে এগিয়ে থাকা একজনের হাতে উঠতে চলেছে এই পুরস্কার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে ব্যালন ডি’অরের তালিকায় এগিয়ে থাকা ছয়জন পুরুষ খেলোয়াড়ের সর্বশেষ মৌসুমের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
উসমান দেম্বেলে (পিএসজি)
প্রথমেই আছেন পিএসজির ফরাসি তারকা উসমান দেম্বেলে। নাটকীয় কিছু না ঘটলে হয়তো তার হাতেই উঠতে যাচ্ছে এবারের ব্যালন ডি’অর। ট্রেবলজয়ী পিএসজির হয়ে ফরাসি উইঙ্গার অসাধারণ একটি মৌসুম কাটিয়েছেন। ৫৩ ম্যাচে ৩৫ গোল ও ১৪টি অ্যাসিস্ট করে মোট ৪৯টি গোলে অবদান রাখেন তিনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৮ গোল ও ৬ অ্যাসিস্ট করে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন দেম্বেলে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারানোর ম্যাচেও দুইটি অ্যাসিস্ট করেছেন। পিএসজির প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। এছাড়া, লিগ ওয়ানে ২৯ ম্যাচে ২১ গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন এবং মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জেতেন।
হ্যারি কেইন (বায়ার্ন মিউনিখ)
ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ গোলদাতা হ্যারি কেইন তার ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর ট্রফি জয়ের স্বাদ পেয়েছেন জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখে। জার্মান ক্লাবটির হয়ে মৌসুমে ৫১ ম্যাচে ৪১ গোল ও ১২ অ্যাসিস্ট করে মোট ৫৩টি গোলে অবদান রাখেন। বুন্দেসলিগার শিরোপা জয়ে তার ছিল অগ্রণী ভূমিকা। ৩২ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার বুন্দেসলিগায় তিনটি হ্যাটট্রিকসহ ২৬ গোল করে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছেন।
কিলিয়ান এমবাপ্পে (রিয়াল মাদ্রিদ)
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে প্রথম মৌসুমে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। রিয়ালের জার্সিতে ৫৯ ম্যাচে ৪৪ গোল করেছেন এই ফরাসি তারকা। লা লিগায় প্রথম মৌসুমেই ৩১ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন এই ফরাসি তারকা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গোল করেন। মৌসুমে তার মোট গোলে অবদান ছিল ৪৯টি, এবং জাতীয় দলের হয়েও তিনি ৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
রাফিনহা (বার্সেলোনা)
ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনহা বার্সেলোনাতে এই মৌসুমে নিজেকে প্রমাণ করেছেন একজন বড় মঞ্চের খেলোয়াড় হিসেবে। ৫৭ ম্যাচে ৩৪ গোল ও ২২ অ্যাসিস্ট করে মোট ৫৬টি গোলে অবদান রাখেন তিনি। কাতালান ক্লাবটির লা লিগা, কোপা দেল রে ও সুপারকোপা শিরোপা জয়ে তার বড় অবদান ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও ১৩ গোল করে হয়েছেন শীর্ষ গোলদাতাদের একজন।
মোহাম্মদ সালাহ (লিভারপুল)
ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের হয়ে মোহাম্মদ সালাহও ছিলেন দারুণ ফর্মে। ৫২ ম্যাচে ৩৪ গোল ও ২৩ অ্যাসিস্টে মোট ৫৭ গোলে অবদান ছিল এই মিশরীয় ফরোয়ার্ডের। প্রিমিয়ার লিগে করেছেন ২৯ গোল ও ১৮ অ্যাসিস্ট। প্রিমিয়ার লিগে চতুর্থবারের মতো গোল্ডেন বুট জিতেছেন, যা আর্সেনালের ফরাসি তারকা থিয়েরি অঁরির সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। প্রিমিয়ার লিগে দ্বিতীয়বারের মতো হয়েছেন মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়।
লামিনে ইয়ামাল (বার্সেলোনা)
এছাড়া আলোচনায় রয়েছেন তরুণ প্রতিভা লামিনে ইয়ামাল। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই বার্সেলোনার হয়ে ৫৫ ম্যাচে ১৮ গোল ও ২১ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। ক্লাবকে লা লিগা, কোপা দেল রে ও সুপারকোপা জেতাতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। স্পেনের হয়ে নিয়মিত পারফর্ম করে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। নেশন্সে লিগের সেমি-ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে স্পেনের ৫-৪ গোলের জয়ে দুটি গোল করেন, যদিও ফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে রানার্সআপ হয়েছে তার দল।