ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রেমে পড়ে গেছেন বুলবুল

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির দায়িত্বে কে আসতে চলেছেন সেটি অনেকটা অনুমেয় ছিল। শেষপর্যন্ত তাই হয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে প্রথমবার সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলার বলেছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এবার পরিচলনা পর্ষদের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হয়ে টেস্টের পথ ধরলেন তিনি। সভাপতি হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন তিনি জানালেন, চার বছরের পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছেন।
সভাপতি হয়ে বুলবুল সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তো সবার। নির্বাচন শুধু ছোট্ট একটা আনুষ্ঠানিক ব্যাপার। চেষ্টা করব সকলের কাছে গিয়ে একসঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে।’
পরবর্তী চার বছরের জন্য সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে বুলবুল জানিয়ে দিলেন স্বল্পমেয়াদি ভাবনা এখন অতীত, তিনি এখন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বিশ্বাসী। জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক আইসিসির চাকরি ছেড়ে কেবল স্বল্প সময়ের জন্য এসেছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে, বদলেছে চিন্তাভাবনাও।
এই বিষয়ে বুলবুল বলেন, ‘এটাকে একটা যাত্রার অংশ করে নিয়েছি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রেমে পড়ে গিয়েছি। হয়তো শর্ট টার্মের জন্য এসেছিলাম, স্বল্প মেয়াদে থাকাটাই সবসময় পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু যখন ট্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রামের মাধ্যমে ছোট ছোট কাজ করা শুরু করলাম এবং সাফল্যগুলো দেখতে পেলাম, সেই লোভটা ছাড়তে পারিনি। সেই লক্ষ্যেই রয়ে গেছি, টু সার্ভ মোর ফর মাই কান্ট্রি।’
বিসিবি নির্বাচনের আগে থেকে এই নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও অভিযোগ ছিল। সরকারি হস্তক্ষেপ, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরে দাঁড়িয়েছেন ২১ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আছেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল, সদ্যবিদায়ী পরিচালক ফাহিম সিনহাসহ আরও অনেকে। তবে নতুন সভাপতি হিসেবে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন বুলবুল।
এই বিষয়ে বুলবুল বলেন, ‘আমরা সকলে একসাথে কাজ করতে চাই বাংলাদেশ ক্রিকেটে। কেউ ক্রিকেট বোর্ডে আছে, কেউ নেই। সমস্ত স্টেকহোল্ডার, সবাইকে আহ্বান জানাব বাংলাদেশ ক্রিকেটে কাজ করতে এবং আমাদেরকে সহায়তা করতে। দরকার হলে আমরা তাদের কাছে যাব এবং যারা এই মুহূর্তে বোর্ডে নেই তাদেরও আমরা আহ্বান জানাব একসাথে এই পথ চলায় সহায়তা করে যেন।’
সংবাদ সম্মেলনে তার পাশে ছিলেন বিসিবির নতুন সহসভাপতি ফারুক আহমেদ। চার মাস আগে যিনি নিজেই সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছিলেন। এবার তিনিও বোর্ডে ফিরেছেন নতুন পরিচয়ে। আমিনুল বললেন, পুরোনো বৈরিতা নয়, এখন লক্ষ্য কেবল দেশের ক্রিকেট।
ফারুকের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে বুলবুল বলেন, ‘আজকে যখন আমি সভাপতি হয়েছি, তখন প্রস্তাবক ছিলেন ফারুক ভাই এবং ফারুক ভাই যখন সহ-সভাপতি হয়েছেন, সেটার প্রস্তাবক ছিলাম আমি। এই কথাটা বলার মূল কারণ হচ্ছে যে, আমাদের সকলের আগে, নিজেদের পদের থেকে আগে হচ্ছে আমাদের ক্রিকেট। আমাদের এই ক্রিকেট আমরা কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
নতুন বোর্ডে নির্বাচিত হওয়া সকলেরই লক্ষ্য এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়া। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে তারা সবাই একসঙ্গে কাজ করতে চান।