রিশাদকে না নামানো ছিল কোচ ও অধিনায়কের সিদ্ধান্ত

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সিরিজ নিশ্চিতের লক্ষ্যে মাঠে নেমে সহজ এক জয় হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। সুপার ওভারে ১ রানে হারের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে রিশাদকে কেনো পাঠানো হলো না সুপার ওভারে। সংবাদ সম্মেলনে সেই প্রশ্নের উত্তর এসেছে সৌম্য সরকারের কাছে থেকে। তিনিও দায়টা দিয়েছেন অধিনায়ক ও কোচের ঘাড়েই।
সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজেকে ১০ রানে আটকে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের সামনে বোলিংয়ে আসেন স্পিনার আকিল হোসাইন। যেখানে ৯ বলের সুপার ওভার থেকে ১১ রান নিতে পারেনি বাংলাদেশ।
আকিলের চতুর্থ বলে ক্যাচ দিয়ে সৌম্য ফিরে আসেন ৩ বলে মাত্র ৩ রান করে। সৌম্য ফেরার পরে নাজমুল হোসেন শান্ত উইকেটে এসে এক বল খেলে ব্যাট-বলে সংযোগ করতে পারেননি। আরেক ব্যাটার সাইফ হাসান করেছেন ২ রান। তিনজন ব্যাটারই দিয়েছেন ব্যর্থতার পরিচয়।
এই মাঠেই মন্থর ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশে কোন ব্যাটার যেখানে ১০০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতে পারেনি সেখানে রিশাদ ৯ নম্বরে নেমে ২৭৮.৫৭ স্টাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন। তার ব্যাট থেকে এসছে ১৪ বলে ৩ চার ও ৩ ছয়ে ৩৯ রানের ইনিংস। অথচ রিশাদকে বিবেচনায় করা হয়নি সুপার ওভারে। এতে যে শুধু বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকরা যে অবাক হয়েছেন তা নয়, অবাক হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলও।
রিশাদকে কেন সুপার ওভারে পাঠানো হয়নি সেটি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সৌম্যকেও প্রশ্ন করা হয়। সৌম্য বলেন, ‘ওটা কোচ আর অধিনায়কের পরিকল্পনা ছিল। তাদের পরিকল্পনার একটা অংশ ছিল এটা। তারা চিন্তা করেছে যে মেইন ব্যাটসম্যানকে পাঠাবে।’
এছাড়া সৌম্যের উইকেট যাওয়ার পর নামানো হয় শান্তকে। অপরপাশে উইকেটে ছিলেন সাইফ। ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনের কথাও চিন্তা করেই কোচ ও অধিনায়ক এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই জানিয়েছেন সৌম্য।
এ প্রসঙ্গে সৌম্য বলেন, ‘এটা নিয়ে তো আমরা সবাই চিন্তা করিনি, এটা কোচ আর অধিনায়ক চিন্তা করেছে। এখানে বাঁহাতি স্পিনার (আকিল) বল করছিল। তাদের (কোচ–অধিনায়ক) মনে হয়েছে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান (নাজমুল) যাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। আপনি ওদের ক্ষেত্রেও দেখবেন, ওরাও কিন্তু বাঁহাতি-ডানহাতি মিলিয়েই ব্যাটিং করেছে।’
গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মিরপুরে সুপার ওভারে ১ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ম্যাচে ঝড়ো ইনিংস খেলে রেকর্ড গড়ার পরও রিশাদকে সুপার ওভারে নামানো হয়নি। সহজ জয়টা যেভাবে হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ তা স্কোরকার্ডেই দেখে নিন..
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২১৩/৭ (সাইফ ৬, সৌম্য ৪৫, হৃদয় ১২, শান্ত ১৫, মাহিদুল ১৭, নাসুম ১৪, সোহান ২৩, মিরাজ ৩২*, রিশাদ ৩৯*; আকিল ১০-১-৪১-২, চেজ ১০-২-৪৪-০, পিয়েরে ১০-০-৪৩-০, মটি ১০-০-৬৫-৩, আথানেজ ১০-৩-১৪-২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৫০ ওভারে ২১৩/৯ (আথানেজ ২৮, কিং ০, কার্টি ৩৫, আগুস্ত ১৭, রাদারফোর্ড ৭, মোটি ১৫, চেজ ৫, গ্রেভস ২৬, আকিল ১৬, পিয়েরে ২*,হোপ ৫৩*; নাসুম ১০-০-৩৮-২, তানভীর ১০-০-৪২-২, রিশাদ ১০-০-৪২-৩, সাইফ ২-০-৯-১, মিরাজ ১০-১-৩৮-০, মুস্তাফিজ ৮-০-৪০-০)
সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১ ওভারে ১০/১ (হোপ ৭*, রাদারফোর্ড ৩, কিং ০*; মুস্তাফিজ ১-০-১০-১)
সুপার ওভারে বাংলাদেশ : ১ ওভারে ৯/১ (সৌম্য ৩, সাইফ ২*, শান্ত ০*; আকিল ১-০-৮-১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ রানে জয়ী।