বড় জয়ে জাতীয় লিগ শুরু চট্টগ্রাম-খুলনার, বাকি দুই ম্যাচ ড্র
জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) দ্বিতীয় দিনের অবস্থা দেখে মনে হয়েছিল তৃতীয় দিনেই ফলাফল নির্ধারণ হয়ে যাবে দুটি ম্যাচের। সেটি হয়নি অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষদিন পর্যন্ত।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) শেষ দিনে এসেও ফলাফল বের হয়নি দুটি ম্যাচের। বাকি দুই ম্যাচের মধ্যে জয় দিয়ে এনসিএল শুরু করল চট্টগ্রাম আর খুলনা বিভাগ।
রাজশাহীকে হারিয়ে চট্টগ্রামের জয়
রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে অনেকটা পিছিয়ে পড়া রাজশাহী আর শেষ পর্যন্ত নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারেনি। রাজশাহীর সামনে চট্টগ্রামের দেওয়া ৪৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে। পাহাড়সম সেই লক্ষ্য তাড়ায় নেমে স্বাগতিকরা থেমেছে ৩৭০ রানে। প্রীতম কুমার একাই চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তবে সেটি জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি। ৮৩ রানে থেমেছেন তিনি। ১১২ রানের বড় জয় দিয়ে লিগ শুরু করল চট্টগ্রাম।
এর আগে প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রামের ৪০১ রানের বিপরীতে রাজশাহী গুটিয়ে গিয়েছিল ১৯৬ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৭৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে চট্টগ্রাম। পরে রাজশাহী থেমেছে ৩৭০ রানে।
ব্যাটহাতে সফরকারী চট্টগ্রামের পথপ্রদর্শক ছিলেন ইয়াসির আলী রাব্বি আর মাহমুদুল হাসান হয়। প্রথম ইনিংসে দুজনই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন। জয় খেলেছিলেন ১২৭ আর ইয়াসীর ১২৯ রানের ইনিংস।
দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরির কাছে গিয়েছিলেন ইয়াসির। তবে নার্ভাস নাইন্টিতে ৯২ রানে ফেরেন তিনি। দুই ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠেছে তার হাতে। দ্বিতীয় ইনিংসে জয় খেলেছিলেন ৫১ রানের ইনিংস। তবে দুই ইনিংসেই ব্যর্থ ছিলেন মুমিনুল হক।
প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে একাই রাজশাহীকে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন হাসান মুরাদ। দ্বিতীয় ইনিংসেও সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন তিনি।
বরিশালকে হারাল খুলনা
ঘরের মাঠে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে দলীয় প্রচেষ্টায় ৩১৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল খুলনা। সেই তাড়া করতে নেমে ১২৬ রানেই গুটিয়ে যায় বরিশাল। ফলোঅনে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেও সুবিধা করতে পারেনি দলটি। স্কোরবোর্ডে দাঁড় করিয়েছিল ২২৪ রান। ফলে খুলনার সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ৩৮ রানের। ৩ উইকেট হারিয়েই সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে খুলনা।
খুলনার হয়ে প্রথম ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন অধিনায়ক জিয়াউর রহমান (৯১ বলে ৬৯) আর শেখ পারভেজ জীবন (৯৮ বলে ৭৩)। এরপর বোলিংয়ে অবদান রাখেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। একাই ৬ উইকেট তুলে নেন তিনি। বরিশালের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন শামসুর রহমান শুভ।
ফলাফল আসেনি নবাগত ময়মনসিংহ বনাম সিলেটের ম্যাচে
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা হয়েছে মোটে তিন ইনিংস। সেটিও শেষ হয়নি। এর মধ্যে ময়মনসিংহ খেলেছে দুই ইনিংস। প্রথম ইনিংসে আরিফুল ইসলাম (২০৮ বলে ১০১) ও আবু হায়দার রনির (১০৫ বলে ১০৭) সেঞ্চুরিতে ৪০১ রান তুলেছিল ময়মনসিংহ। জবাব দিতে নেমে সৈকত আলীর ১৭৫ রানে ভর করে সিলেট থেমেছিল ৪৮৯ রান করে।
৮৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ময়মনসিংহ। শেষ দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান তুলে সফরকারী ময়মনসিংহ।
সিলেটের প্রথম ইনিংসে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান ময়মনসিংহের বোলার স্পিনার রাকিবুল হাসান। ৫৫.৩ ওভার বল করে ১৬৮ রান খরচায় তিনি একাই তুলে নেন ৯ উইকেট।
অমিমাংসিত থেকেছে ঢাকা-রংপুরের ম্যাচও
সিলেটের একাডেমি মাঠে অনেকটা ফলাফলের কাছে ছিল রংপুর আর ঢাকা বিভাগের ম্যাচটি। তবে শেষ পর্যন্ত এটিও শেষ হয়েছে অমিমাংসিত থেকেই। যদিও আলো স্বল্পতার জন্য একটু আগেই খেলা বন্ধ করে দেন আম্পায়ার।
প্রথম ইনিংসে মার্শাল আয়ুবের (১৬১ বলে ১০৫) সেঞ্চুরিতে ২২১ রান করেছিল ঢাকা। জবাবে নাঈম ইসলামের (২৬৯ বলে ১৩৭) অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ৩৫৮ রানে থেমেছিল রংপুর। তৃতীয় ইনিংসে ঢাকাও তুলেছিল বড় রান। সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছিলেন জিসান আলম (১৫৮ বলে ৯৭)। এরপর ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান তুলতেই বন্ধ হয়ে যায় শেষ দিনের খেলা।

স্পোর্টস ডেস্ক