কষ্ট করে জয় পাওয়া টেস্টের সৌন্দর্য : শান্ত
ঢাকা টেস্টে জয় পেতে আয়ারল্যান্ডকে বিশ্বরেকর্ড গড়তে হতো। পাহাড়সম ৫০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিনেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। জয় না পেলেও টেস্টের শেষদিনে বড় প্রতিরোধ গড়ে তোলে আয়ারল্যান্ড। কিন্তু তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ। শেষ দিনের দ্বিতীয় সেশনে পর পর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে ২১৭ রানের বড় ব্যবধানের জয় এনে দেন তিনি।
আজ রোববার (২৩ নভেম্বর) টেস্টের পঞ্চম দিনে আয়ারল্যান্ডের শেষ ৪ উইকেট তুলে নিতে বেশ ঘাম ঝড়িয়েছে বাংলাদেশ। আর এটাকেই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য মনে করছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজুমল হোসেন শান্ত।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত বলেন, ‘আমি আয়ারল্যান্ড দলকে অভিনন্দন জানাতে চাই, বিশেষ করে এমন কন্ডিশনে এত ভালো ব্যাটিং করার জন্য। এটাই তো টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য আমার মনে হয়। ছোট দল বড় দল বলে আসলে কিছু নেই। ওরা খুবই ভালো ক্রিকেট খেলেছে, এটা মানতেই হবে। পঞ্চম দিনের উইকেটে এসে যেভাবে ওরা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছুড়ে দিয়েছে, অবশ্যই ওদেরকে এই কৃতিত্বটা দিতে হবে।’
শান্ত যোগ করেছেন, ‘পাশাপাশি আমি বলব যে আমাদের বোলাররা সবাই যেভাবে ধৈর্য ও দায়িত্ব নিয়ে বল করেছে এটা আসলে কৃতিত্ব দেওয়ার মতো।’
মিরপুরের উইকেটটাকে স্পিন নির্ভরই ভাবা হয়। কিন্ত এই টেস্টে বোলারদের বেশ লড়াই করতে হয়েছে, আর ব্যাটাররা অনেকটাই স্বচ্ছন্দে খেলে গেছেন। চতুর্থ ইনিংস আইরিশদের অলআউট করতে বাংলাদেশ ১১৩.৩ ওভার বোলিং করেছে। এই উইকেটে টেস্টটা যে পাঁচ দিন গড়াবে তা ভাবেননি তবে অধিনায়ক শান্ত নিজেও।
এ বিষয়ে শান্ত বলেন, ‘ভালো লাগছে। অবশ্যই ভালো লাগছে। আশা করিনি, সত্যি বলতে আমরাও আশা করিনি। কিন্তু পাঁচ দিন গিয়েছে। কষ্ট করে এই ইনিংসে দশটা উইকেট নেয়া লাগছে এটাই আসলে টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য এবং আমরা সবাই, প্রত্যেকটা প্লেয়ার খুব উপভোগ করেছে এই টেস্ট ম্যাচটি।’
মিরপুরে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতয়ি টেস্টে ২১৭ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা টেস্টের ফলাফলটা দেখে নিন স্কোরকার্ড থেকেই…
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১৪১.১ ওভারে ৪৭৬/১০ (জয় ৩৪, সাদমান ৩৫, মুমিনুল ৬৩, শান্ত ৮, মুশফিক ১০৬, লিটন ১২৮, মিরাজ ৪৭, তাইজুল ৪, মুরাদ ১১, ইবাদত ১৮*, খালেদ ৮; নিল ১১-১-৪৭-০, ক্যামফার ১০-০-৩২-০, ম্যাকব্রাইন ৩৩.১-৩-১০৯-৬, হামফ্রিস ৫০-৫-১৫১-২, হোয় ৩৪-৩-১১৫-২, টেক্টর ৩-০-১০-০)
আয়ারল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৮৮.৩ ওভারে ২৬৫/১০ (বালবার্নি ২১, স্টার্লিং ২৭, কারমাইকেল ১৭, টেক্টর ১৪, ক্যাম্পার ০, টাকার ৭৫*, ডোহেনি ৪৬, ম্যাকব্রাইন ০, নিল ৪৯, হোয়ে ৪, হাফফ্রিস ৪; ইবাদত ১২-১-৪৭-১, খালেদ ৮-০-৩৯-২, তাইজুল ৩৫.৩-৬-৭৬-৪, মুরাদ ২১-৩-৫৩-২, মিরাজ ৯-১-৩৮-১, মুমিনুল ৩-১-৫-০)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৬৯ ওভারে ২৯৭/৪ ডিক্লেয়ার ( জয় ৬০, সাদমান ৭৮, শান্ত ১, মুমিনুল ৮৭, মুশফিক ৫৩*; নিল ৯-১-৪৮-১, হামফ্রিস ১৫-০-৫৪-০, ম্যাকব্রাইন ২৬-২-৮২-১, হোয়ে ১৭-০-৮৪-২, টেক্টর ২-০-১২-০)
আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস : ১১৩.৩ ওভারে ২৯১/১০ ( বালবার্নি ১৩, স্টার্লিং ৯, কারমাইকেল ১৯, টেক্টর ৫০, ক্যাম্ফার ৭১*, টকার ৭, ডোহেনি ১৫, ম্যাকব্রাইন ২১, নিল ৩০, হোয়ে ৩৭, হামফ্রিস ০ ; ইবাদত ১১-৩-২৯-০, খালেদ ১২-০-৪৫-১, তাইজুল ৪০-৭-১০৪-৪, মুরাদ ২২.৩-১১-৪৪-৪, মিরাজ ২৭-১১-৪৯-১, মুমিনুল ১-০-২-০)
ফল : বাংলাদেশ ২১৭ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা : মুশফিকুর রহিম
সিরিজ সেরা : তাইজুল ইসলাম
সিরিজ : বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে জয়ী

স্পোর্টস ডেস্ক