চেইনশপ চালাবে রোবট
পেটে খুব ক্ষুধা। রাস্তার মোড়ে ফাস্টফুডের দোকানটাতে ঢুকে পড়লেন চট করে। কিন্তু খাবার অর্ডার দেওয়ার জন্য কোনো মানুষ খুঁজে পাচ্ছেন না। কাউন্টারের ওপারে হয় মেশিন নয়তো রোবট, কোন মানুষ নেই। রোবটরাই চালাচ্ছে দোকানটা! কোনো সায়েন্স ফিকশন মুভির দৃশ্য নয়, কয়েক দিন পর এটাই বাস্তব হবে।
শ্রমিক সংকট এবং মজুরি বৃদ্ধির ফলে ম্যাকডোনাল্ডস, পিৎজা হাট, কেএফসির মতো বড় বড় ফাস্ট ফুড চেইন তাদের ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। আর এ কারণেই রোবট প্রযুক্তির দিকে হাত বাড়াচ্ছে তারা।
আর্থিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান কর্নারস্টোন ক্যাপিটাল গ্রুপের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতন ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। কিন্তু সেভাবে খাবারের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। কারণ এতে জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়বে, কমে যাবে বিক্রির পরিমাণ। বাড়তি মজুরির কারণে মালিকদের মুনাফার অংশও কমে যাচ্ছে।
কর্নারস্টোনের করপোরেট গর্ভনেন্স, এনগেজমেন্ট এবং গবেষণা বিভাগের প্রধান জন উইলসন বলেন, ‘ফাস্ট ফুড দোকানের সংস্কৃতিটা অচিরেই বদলে যাবে। আগামী দশকে আপনি কোনো ক্যাশিয়ারকে কাউন্টারে দেখতে পাবেন না। কারণ ভোক্তারা এখনই বাসায় বসে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে খাবার অর্ডার করতে পারেন। তাই রেস্টুরেন্টে এসে অর্ডার দেওয়ার চলটাই হয়তো থাকবে না। ফলে দোকান চালাতে লোকও কম লাগবে।’
ফাস্ট ফুড প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা টেকনোমিকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ড্যারেন ট্রিসটানো বলেন, ‘যখন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা অনলাইনে মানুষ খাবার অর্ডার করছে তখন তাদের ঝামেলা কমে যাচ্ছে। কাজটা অনেক দ্রুত হচ্ছে এবং নির্ভুলভাবে হচ্ছে। আর এতে রেস্টুরেন্ট চালানোর খরচও কমে আসছে।’
তবে রোবটদের হাতেই যে চলে যাবে ফাস্ট ফুড ইন্ডাস্ট্রি এ বিষয়ে একমত নন ট্রিসটানো। তাঁর মতে, রোবটরা হয়তো দ্রুত কাজ করতে পারবে, খরচ কমিয়ে আনতে পারবে। কিন্তু রান্নায় দক্ষ রাধুনীর হাতের ছোঁয়াতে যে স্বাদ রয়েছে সেটা রোবটদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। দাপ্তরিক কাজগুলো রোবটদের হাতে ছেড়ে দিলেও রান্নার ভারটা মানুষের হাতেই থাকবে বলে মনে করেন তিনি।
ফাস্টফুড ইন্ডাস্ট্রিতে যদি রোবট ব্যবহারের বিষয়টি চালু হয়ে যায় তাহলে টেসকো বা সাবওয়ের মতো অন্য চেইনশপগুলোও রোবট নিয়োগের দিকে ঝুকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।