এক শিশুর জন্মে তিনজনের ভূমিকা
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/09/28/photo-1475047256.jpg)
বিশ্বে এই প্রথম নতুন এক পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে তিনজন মানুষের ভূমিকা।
এই শিশুটির জন্মের পেছনে তাঁদের বাবা-মা ছাড়াও আরো একজনের অবদান ছিল।
কয়েক মাস আগে শিশুটির জন্ম হয়। তবে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘নিউ সায়েন্টিস্ট’ খবরটি সম্প্রতি প্রকাশ করে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, নতুন প্রক্রিয়ায় চিকিৎসকরা মায়ের ডিম্বাণু থেকে গুরুত্বপূর্ণ সব ডিএনএ সংগ্রহ করেন। একই সঙ্গে দাতার ডিম্বাণু থেকেও স্বাস্থ্যকর মাইটোকন্ড্রিয়া সংগ্রহ করেন তাঁরা। এরপর এ দুটিকে নিষিক্ত করা হয় পিতার শুক্রাণু দিয়ে। পরে শিশুটির জন্ম হয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, নবজাতক শিশুটি একটি ছেলে। তাঁর বয়স এখন পাঁচ মাস। শিশুটি সুস্থ আছে। এখন পর্যন্ত তার শরীরে কোনো ত্রুটি ধরা পড়েনি।
এই শিশুটির শরীরে স্বাভাবিকভাবেই ছিল তার মা ও বাবার ডিএনএ। কিন্তু এরপরও তৃতীয় আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে ছোট একটি জেনেটিক কোড নিয়ে সেটি তার শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ওই ব্যক্তিটি একজন দাতা।
শিশুটির মা জর্ডানের নাগরিক। তাঁর জিনে কিছু ত্রুটি ছিল। শিশুটি যাতে ত্রুটিমুক্ত হয়ে জন্মাতে পারে, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা সেটা নিশ্চিত করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। তাঁরা বলছেন, যেসব পরিবারে জেনেটিক ত্রুটি বা সমস্যা আছে, বিজ্ঞানের এই আবিষ্কার তাদের সাহায্য করতে পারে। তবে তাঁরা বলছেন, এই কাজটি করার আগে বহু জিনিস পরীক্ষা করে নেওয়া খুব জরুরি।
মাইটোকন্ড্রিয়াল ডোনেশন নামে এ প্রক্রিয়া নিয়ে এখনো প্রচুর বিতর্ক হচ্ছে।
তিনজন মানুষের শরীর থেকে ডিএনএ নিয়ে এই প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হলো। ব্যাপারটি কিন্তু তা নয়।
নব্বইয়ের দশকে এই কাজ প্রথম হয়েছে। তবে এবার যেভাবে করা হলো, সেটি একেবারে নতুন এবং তাৎপর্যপূর্ণ প্রক্রিয়া।
প্রত্যেক কোষের ভেতরে থাকে ছোট্ট একটি কম্পার্টমেন্ট, যাকে বলা হয় মাইটোকন্ড্রিয়া। এই মাইটোকন্ড্রিয়া খাদ্য থেকে শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি তৈরি করে।
কোনো কোনো নারীর মাইটোকন্ড্রিয়ায় জেনেটিক ত্রুটি থাকে এবং সেটা তাদের সন্তানদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে পারে।
জর্ডানের এই পরিবারটির যে ত্রুটি ছিল, তার নাম 'লেই সিন্ড্রোম'। এবং এই ত্রুটির ফলে শিশুটির মৃত্যুও হতে পারত।
এই ত্রুটি সংশোধন করতে বিজ্ঞানীদের বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের গবেষণা আইন করে নিষিদ্ধ। তাই চিকিৎসকদের এই দলটিকে যেতে হয়েছে মেক্সিকোতে, যেখানে এসব নিষিদ্ধ করে কোনো আইন কার্যকর নেই।