মঙ্গলযাত্রায় নতুন বাধা

মঙ্গলযাত্রা নিয়ে মানুষের আগ্রহ নেহাত কম নয়। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। স্পিরিট, বিগলসহ বেশ কিছু রোবটিক যানও তারা পাঠিয়েছে মঙ্গল গ্রহে মানুষের অভিযানবিষয়ক তথ্য সংগ্রহের জন্য। কিন্তু সম্প্রতি গবেষণায় পাওয়া গেল নতুন এক সমস্যার কথা, যা মঙ্গল গ্রহে মানুষের অভিযানের ক্ষেত্রে এক বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখা দিতে পারে।
বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণা পত্রিকা ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে, মহাকাশে ভেসে বেড়ানো অসংখ্য ক্ষুদ্র শক্তিকণা অভিযাত্রীদের বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলতে সক্ষম।
মঙ্গল গ্রহের মতো স্থানে দীর্ঘদিনব্যাপী অভিযান চালাতে গেলে এ ধরনের শক্তিকণার সম্মুখীন হতে হবে অভিযাত্রীদের, যা তাঁদের মস্তিষ্কের সেলগুলোর ভয়াবহ ক্ষতিসাধন করতে পারে। ফলে তা স্মৃতিশক্তির জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা দেবে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের ওপর গবেষণা করে এই তথ্য জানতে পারেন।
মহাজাগতিক নক্ষত্রের সংঘর্ষে যে কসমিক রশ্মির সৃষ্টি হয়, তাতে এ ধরনের অসংখ্য শক্তিকণা থাকে। প্রায় আলোর বেগে প্রবাহিত এসব কণার সংস্পর্শে আসা মঙ্গল কিংবা অনুরূপ দূরবর্তী অভিযানে নিয়োজিত অভিযাত্রীদের জন্য খুবই সম্ভব।
বিশেষ করে নাসা যেখানে অনুমান করে, ভবিষ্যতে মঙ্গলে অভিযান চালাতে গেলে অভিযাত্রীদের প্রায় এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত মহাকাশে কাটাতে হতে পারে, সেখানে এ জাতীয় শক্তিকণার উপস্থিতি খুবই ক্ষতিকর প্রভাব রাখতে পারে।
বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই প্রভাব অভিযান শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসার পরও সক্রিয় থাকতে পারে। গবেষণা দলের প্রধান চার্লস লিমোলি জানান, প্রায় কসমিক রশ্মির সমপর্যায়ের রশ্মি ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করে দেখা গেছে, ছয় সপ্তাহের ভেতর তাদের মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি উল্লেখযোগ্য আকারে হ্রাস পেয়েছে। যা তাঁর ভাষায়, ‘খুবই বিস্ময়কর’।
২০৩০ সালের মধ্যে নাসা মঙ্গলে অভিযাত্রী দল পাঠাতে চায়, সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের এই নতুন আবিষ্কার নিঃসন্দেহে এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে।