ইউক্রেনের ইইউ সদস্যপদ পাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহে
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে কি না, সে বিষয়ে ইইউ’র সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ জানতে পারবে ইউক্রেন। আকস্মিক সফরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে গিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন দার লেয়েন। সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশনপ্রধান গতকাল শনিবার কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় উরসুলা ভন ডার লেয়েন জেলেনস্কিকে ইইউ’র সদস্যপদের বিষয়ে অবস্থানের কথা জানান।
এ আগে উরসুলা ভন ডার লেয়েন জানিয়েছিলেন, জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের বিষয়েও আলাপ হবে।
এক টুইটার পোস্টে লেয়েন লেখেন, ‘পুনর্গঠনের জন্য যৌথ কাজের এবং ইউরোপীয় (ইউনিয়নের) পথে ইউক্রেনের অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজখবর নেব আমি।’
এদিকে, সিঙ্গাপুরে শাঙগ্রি-লা এশিয়া সংলাপে নিরাপত্তা সম্মেলনের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাতের কারণে খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখতে ইউক্রেন হিমশিম খাচ্ছে এবং রুশ অবরোধের কারণে বিশ্বের কিছু কিছু স্থান ‘চরম ও গুরুতর খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের’ সম্মুখীন হয়েছে।
এদিকে, গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোর দিয়ে বলেছেন—যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইউক্রেনকে রাশিয়ার আক্রমণের আশু ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু জেলেনস্কি ‘তা শুনতে চাননি।’
বাইডেন আরও বলেন ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এ ধরনের কোনো কিছু ঘটেনি। আমি জানি অনেকেই ভেবেছিল যে, আমি হয়তো অতিরঞ্জিত করে বলছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম, আমাদের কাছে তথ্য আছে যে তিনি, অর্থাৎ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, (ইউক্রেনের) সীমান্ত অতিক্রম করে ঢুকে পড়বেন।’
যদিও যুদ্ধের সময়ে জেলেনস্কি নিজের নেতৃত্বের মাধ্যমে ইউক্রেনীয়দের উদ্বুদ্ধ করেছেন, তবুও আক্রমণের জন্য তাঁর প্রস্তুতি বা সেটার অভাব একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে রয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জেরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহগুলোতে যখন বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বারবার সতর্ক করছিলেন যে, রাশিয়ার আক্রমণের সমূহ আশঙ্কা রয়েছে, তখন জেলেনস্কি প্রকাশ্যেই এ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন।
সে সময়ে জেলেনস্কি এ বিষয়েও উদ্বিগ্ন ছিলেন যে, যুদ্ধের দামামা ইউক্রেনের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।
বর্তমানে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা ক্রমেই চিন্তিত হয়ে পড়ছেন যে, জেলেনস্কির মিত্ররা ‘যুদ্ধ অবসাদে’ ভুগতে থাকলে পশ্চিমাদের কাছে থেকে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন কমে যেতে থাকবে।