ইরানে রহস্যজনক বিষপ্রয়োগের শিকার আরও বেশ কয়েকজন স্কুলছাত্রী
ইরানে স্কুল শিক্ষার্থীদের ওপর রহস্যজনক বিষপ্রেয়াগ যেন থামছেই না। এবার আবারো দেশটির হামেদান, জানজান, পশ্চিম আজারবাইজান, ফার্স এবং আলবুর্জ প্রদেশের বেশ কয়েকটি স্কুলে বিষপ্রয়োগে কয়েক ডজন স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শ্বাসকষ্টজনিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের অনেককেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায় অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অ্যাম্বুলেন্স ও বাসে করে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। বাচ্চাদের বাসায় নিতে স্কুলগুলোর সামনে অভিভাবকদের ভিড় করতেও দেখা গেছে। এ ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অসুস্থতার কারণসহ ঘটনার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না পাওয়া পর্যন্ত সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না বলেও জানিয়েছেন অনেক অভিভাবক।
গত বুধবারও (১ মার্চ) রাজধানী তেহরান ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আদরাবিলের অন্তত ১০ টি গার্লস স্কুলে এমন বিষাক্ত গ্যাস হামলা চালানো হয়।
এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ৩১ প্রদেশের এ দেশটির অন্তত ১০ টি প্রদেশের ৩০ টিরও বেশি স্কুলে এমন বিষপ্রয়োগ ও অসুস্থতার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত বছরের নভেম্বরে ইরানের পবিত্র কোম শহরের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থীদেরকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্তের ব্যাপারটি প্রকাশ্যে আসে। এতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও শ্বাসকষ্ট, বমি, মাথা ঘোরা, ক্লান্তিসহ নানা অসুস্থতায় ভোগে ছাত্রীরা। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান অভিভাবকরা। স্কুল যাওয়া ঠেকাতেই তাদের ওপর বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করা হয়েছে বলেই ধারণা অনেকের।
তবে হঠাৎ করেই শতাধিক শিক্ষার্থীর এমন অসুস্থতাকে ব্যাখ্যাতীত বলে দাবি ইরানের। এগুলোকে পূর্বপরিকল্পিত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও বলছে দেশটি।
শুক্রবার (৩ মার্চ) ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এমন ঘটনাকে ‘সন্দেহজনক বিষপ্রয়োগ’ আখ্যা দিয়ে এটিকে “শত্রুদের ষড়যন্ত্র” বলে অভিযোগ করেছেন। জনগণের মধ্যে ভয় ও হতাশা তৈরি করতেই এমন যড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন রাইসি।
অপরদিকে ‘নারী শিক্ষা বন্ধ করতেই পরিকল্পিতভাবে এমন হামলা চালানো হচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী ইউনুস পানাহি।
মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশগুলো নারী শিক্ষার হারে এগিয়ে তাদের মধ্যে অন্যতম ইরান। প্রায় ৫ কোটি নারী জনসংখ্যার এ দেশটির ৯৫ ভাগেরও বেশি নারীই শিক্ষিত বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।