করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঘনীভূত, ইউরোপে ফের কড়াকড়ি
ইতালি, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশই আবারও বাড়তে থাকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করছে। ফ্রান্স ও স্পেন যেভাবে তাদের কিছু কিছু শহর একেবারে বন্ধ করে দিয়েছিল, তেমনিভাবে ওইসব দেশের নেতারা কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করতে চাইছেন। এতে তাদের বাণিজ্য-অর্থনীতি চরম ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে এমনটি বলা হয়েছে।
করোনায় প্রথম ধাক্কায় ইউরোপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইতালিতে গত কয়েক দিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক কোভিড রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিতে হয়েছে। গত রোববার একদিনে ৪২০ জনকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ৩৯০ জন। সেদিন পাঁচ হাজার ৪৫৬ জনের করোনা শনাক্ত হয় এবং ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এমন পরিস্থিতিতে এ সপ্তাহ থেকেই তারা নতুন করে বাধ্যবাধকতা আরোপ করবে বলে জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে ঘরের বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে ইতালি। করোনায় ৩৬ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হওয়া দেশটিতে কেউ এই নিয়ম না মানলে ৪০০ থেকে এক হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যেও করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। টায়ার পদ্ধতি, অর্থাৎ ‘মিডিয়াম’, ‘হাই’ অথবা ‘ভেরি হাই’—এই তিন ক্যাটাগরিতে শহরগুলো ভাগ করে সেখানে সতর্কতা জারি করার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। উত্তর-পশ্চিমের লিভারপুলকে ‘ভেরি হাই’, অর্থাৎ সর্বোচ্চ সতর্কতা দেওয়া হবে। জিম, বার ও ক্যাসিনোগুলো বন্ধ থাকবে।
রোববার যুক্তরাজ্যে করোনায় ৬৫ জনের মৃত্যু হয়। আর সেদিন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৮৭২ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি মানুষের করোনা হয়েছে। মোট মৃত্যু ৪২ হাজার ৮২৫ জন। ৪ অক্টোবর যুক্তরাজ্যে সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৯৬১ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।
এ ছাড়া জার্মানির কয়েকটি শহর করোনার হটস্পট হয়ে উঠেছে। দেশটির বার্লিনসহ কোলন, ডোসেলডর্ফ, এসেন ও স্টুটগার্টে গত কয়েক দিনে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। গতকাল সোমবার জার্মানিতে দুই হাজার ৪৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। স্টুটগার্টে ভাইরাস মোকাবিলায় সামরিক বাহিনীর সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ফ্রান্সের টোলোজা ও মন্তপিলার শহরে আজ মঙ্গলবার থেকে ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া প্যারিস, মার্সেই, লিল, লিও, গ্রোনবল ও সান্ত-এতিয়ান শহরে আগে থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি আছে। এসব শহরে বার ও জিম বন্ধ রয়েছে।
রোববার ফ্রান্সে একদিনে ১৬ হাজার ১০১ জন নতুন করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়। আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ৮৯৬ জন। দেশটির সব হাসপাতাল মিলিয়ে ৩০ শতাংশের বেশি আইসিইউ শয্যা করোনা রোগীদের দখলে রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৩ হাজার ফরাসি করোনায় মারা গেছেন।