কৈশোরে নেওয়া বই ফেরত দিলেন বৃদ্ধ বয়সে!
মেয়েটির বয়স তখন মাত্র ১৪। জার্মান ভাষা নিয়ে পড়ছিল হোয়াইটলি বে গ্রামার স্কুলের ‘ও’ লেভেলে। তখন পড়াশোনার জন্য দরকার পড়ে ‘আইচ লার্ন ডয়েচ’ নামের একটি বই। যুক্তরাজ্যের উত্তর টাইনসাইডের কিলিংওয়ার্থ লাইব্রেরি বইটি সংগ্রহ করেন নেন ওই শিক্ষার্থী। তবে, ফেরত দিতে গেলেন ভুলে।
ফেরত দেওয়ার কথা মনে হলেও জরিমানার ভয়ে আর দিলেন না। এর মধ্যে কেটে গেছে ৫৬ বছর। অবশেষে জরিমানা মওকুফের ঘোষণার পর লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধ বয়সে বইটি ফেরত দিয়েছেন সাবেক ওই শিক্ষার্থী। খবর এনডিটিভির।
প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, ১৯৬৬ সালে জার্মান ভাষা নিয়ে হোয়াইটলি বে গ্রামার স্কুলে ‘ও’ লেভেলে পড়ছিলেন ১৪ বছর বয়সী ল্যারি। ওই সময় কিলিংওয়ার্থ লাইব্রেরি থেকে একটি বই নেন তিনি। বইটি ২১ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি জমা দিতে ভুলে যান। সময়সীমা শেষ হওয়ার পর থেকে বইটির জন্য প্রতি সপ্তাহে তিন পেন্স (যুক্তরাজ্যের মুদ্রা) করে জরিমানা গুনতে হবে বলে বইয়ে লেখা ছিল।
জরিমানার ভয়ে আর বইটি জমা দেওয়ার সাহস করেননি ল্যারি। অবশেষে, লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ জরিমানা মওকুফের ঘোষণা দেওয়ার পরেই বইটি ফেরত দিয়েছেন বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী এই নারী।
ল্যারি বলেন, ‘লাইব্রেরি কাউন্সিল জরিমানা মওকুফ ও সবচেয়ে পুরাতন বই ফেরত দেওয়া নিয়ে পুরষ্কারের ঘোষণা দেওয়ার পরই আমি বইটি ফেরত দিয়েছি।’
এনডিটিভি বলছে, বইটি ফেরত না দিলে আজকের সময়ে ল্যারিকে জরিমানা গুনতে হতো দুই হাজারের বেশি ইউরো।
যুক্তরাজ্যের উত্তর শিরোমোরের বাসিন্দা ল্যারি বলেন, ‘হোয়ইটলি বে গ্রামার স্কুলে জার্মান ভাষা নিয়ে আমি ‘ও’ লেভেল পড়েছিলাম। ‘এ’ লেভেলেও আমি জার্মান ও ফ্রেঞ্চ ভাষা নিয়ে পড়েছি। পরে স্প্যানিশ ভাষা নিয়েও পড়েছি। তবে জার্মানির অনেক শব্দই আমি মনে করতে পারছি না।’
ল্যারি আরও বলেন, ‘লাইব্রেরি থেকে বইটি নেওয়ার পরই, আমি বাবার বাড়ি থেকে চলে যায়। জরিমানা গোনার মতো অর্থ আমার কাছে ছিল না। বইটি আমার ড্রয়ারেই গচ্ছিত ছিল। অনেক জায়গা পরিবর্তন করলেও বইটি আমার কাছেই ছিল।’
৭০ বছরী এই বৃদ্ধা আরও বলেন, ‘জরিমানা মওকুফ ও পুরষ্কারের ঘোষণার শোনার পর, আমি নিশ্চিত ছিলাম লাইব্রেরির বই আমার কাছে রয়েছে। আমি জানতাম, এটি ফেরত দিতে গেলে লাইব্রেরির লোকজন অবাক হবে। ফেরত দেওয়া বইটি এখনও ভালো অবস্থায় রয়েছে।’