নিজের বিয়ে বাতিল করলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
বিয়ে পেছালেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। নভেল করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্টের বিস্তারের গতি কমাতে দেশটি সম্প্রতি নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আর, এ কারণেই নিজের বিয়ের আয়োজন বাতিল করেছেন জেসিন্ডা আরডেন। তিনি আজ রোববার নিজেই সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে—সম্প্রতি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের পরে নিউজিল্যান্ডে নয় জনের কোভিড শনাক্ত হলে গোষ্ঠীগত সংক্রমণের আশঙ্কা করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিউজিল্যান্ড সরকার আজ রোববার মধ্যরাত থেকে নতুন করে কোভিড বিধি আরোপ করছে। এসব বিধিতে নির্দিষ্ট স্থানে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতাসহ সীমিত জনসমাগমের কথা বলা হয়েছে।
রয়টার্স বলছে—নিউজিল্যান্ডের একটি পরিবার দেশটির নর্থ আইল্যান্ডের অকল্যান্ডে একটি বিয়ে এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান শেষে ফ্লাইটে করে সাউথ আইল্যান্ডের নেলসনে ফিরে আসে। এরপর ওই পরিবারের সব সদস্য এবং একজন ফ্লাইট অ্যাটেন্ড্যান্ট করোনা পজিটিভ হন।
নিউজিল্যান্ডের নতুন কোভিড বিধি অনুযায়ী, পানশালা ও রেস্তোরাঁর মতো পরিষেবা এবং বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি জনসমাগম করা যাবে না। তবে, আজ এক সংবাদ সম্মেলনে জেসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, কোনো ভেন্যুতে টিকা সনদের বাধ্যবাধকতা না রাখলে ২৫ জনের বেশি জনসমাগম করা যাবে না।
জেসিন্ডা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে না।’ আরও কেউ যদি তাঁর মতো একই পরিস্থিতির মুখে পড়ে থাকেন, তাঁর জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন জেসিন্ডা। নিজের বিয়ের তারিখ প্রকাশ করেননি জেসিন্ডা। তবে, তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠান আসন্ন বলে গুঞ্জন চলছিল।
দীর্ঘদিনের সঙ্গী ক্লার্ক গেফোর্ডকে বিয়ে করছেন জেসিন্ডা। ক্লার্ক একটি ফিশিং-শো’র সঞ্চালক। বিয়ে বাতিল করতে হওয়ায় কেমন লাগছে—সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেসিন্ডার সপ্রতিভ উত্তর, ‘জীবন তো এমনই।’
‘বলতে দ্বিধা নেই—মহামারির আরও বিধ্বংসী প্রভাব অনুভব করা হাজারও নিউজিল্যান্ডবাসীর চেয়ে আমি ভিন্ন কেউ নই। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হলো—প্রচণ্ড অসুস্থ প্রিয়জনের কাছাকাছি থাকতে না পারা। আমার (বিয়ে বাতিল হওয়ার) দুঃখের চেয়ে ওই কষ্ট অনেক অনেক বেশি’, যোগ করেন জেসিন্ডা।
করোনাকালে ২০২০ সালের মার্চ থেকে নিউজিল্যান্ডের সীমান্ত বিদেশিদের জন্য বন্ধ রয়েছে। দেশটির সরকার জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সীমান্ত পর্যায়ক্রমে পুনরায় খোলার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু, প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার মতো সম্ভাব্য ওমিক্রন প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা থেকে সে পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে এসেছে জেসিন্ডার সরকার।
ব্যতিক্রম কিছু ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড সে দেশে ভ্রমণের অনুমতি দেয়। তবে, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অবশ্যই রাষ্ট্র-পরিচালিত কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থায় থাকার আবেদন করতে হয়। ওমিক্রন নিয়ে আসা লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যে নিউজিল্যান্ড সরকার গত সপ্তাহে নতুন করে কাউকে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
নিউজিল্যান্ডে ১২ বছরের বেশি বয়সিদের প্রায় ৯৪ শতাংশকে কোভিডের পূর্ণ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এবং টিকার বুস্টার ডোজের আওতাধীনদের প্রায় ৫৬ শতাংশ বুস্টার ডোজ নিয়েছে।