পাপুলকাণ্ডে কুয়েতে সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
অর্থ পাচার, মানবপাচারসহ আরো একাধিক অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশের সংসদ সদস্য শহীদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কুয়েতের মেজর জেনারেল শেখ মাজেন আল জারাহকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
আরবি ভাষার পত্রিকা আল কাবাসের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ জানিয়েছে, ঘুষের বিনিময়ে পাপুলের বেশ কিছু কাজ দ্রুত অনুমোদন করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে মেজর জেনারেল মাজেন আল জারাহর বিরুদ্ধে। সে সময় তিনি কুয়েতের নাগরিকত্ব, পাসপোর্ট ও বসবাসের অনুমতিবিষয়ক দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট আন্ডার সেক্রেটারি ছিলেন বলে জানিয়েছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ।।
পাপুল ২৩ হাজারের বেশি কর্মীর এন্ট্রি ভিসার অনুমোদনের জন্য যাঁদের ঘুষ দেওয়ার কথা রিমান্ডে বলেছিলেন, তাঁদের মধ্যে মাজেন আল জারাহ একজন।
ওই অভিযোগ আসার পর গত জুনের শেষ দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট আন্ডার সেক্রেটারির পদে থাকা মেজর জেনারেল মাজেন আল জারাহকে বরখাস্তের আদেশ দেন কুয়েতের উপপ্রধানমন্ত্রী আনাস আল সালেহ।
এরপর গত বৃহস্পতিবার এই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশন। ওই পরোয়ানার ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের সেখানে বসবাসের অনুমতি রয়েছে।
পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থ পাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন। ১৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর এখন তাঁকে রাখা হয়েছে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে।
কুয়েতি কর্মকর্তাদের কীভাবে কত টাকা ঘুষ দিয়েছেন, সে বিষয়ে রিমান্ডে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশের এই সংসদ সদস্য, যা প্রসিকিউটরদের বরাতে প্রকাশ করছে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। সেখানে নাম আসায় কুয়েতের দুই এমপির বিরুদ্ধেও পাপুলকে বেআইনি কাজে সহযোগিতা এবং অর্থ পাচারে জড়িত থাকার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
সালাহ খুরশিদ ও সাদুন হাম্মাদ নামের ওই দুই এমপিকে বিচারের মুখোমুখি করতে ইতোমধ্যে তাঁদের ‘সংসদীয় ইমিউনিটি’ প্রত্যাহার করেছে কুয়েতের সংসদীয় বিচারবিষয়ক কমিটি। এর ফলে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশন এখন তাঁদের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করতে পারবে।