যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন আগামী বুধবার দুপুরে দেশটির ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন, তার আগে সেদিন সকালেই হোয়াইট হাউস ছাড়ার পরিকল্পনা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি বাইডেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকবেন না। গত দেড় শতাব্দীর মধ্যে এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর উত্তরসূরির শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের শপথের দিন সকালেই ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছাড়বেন। যদিও এর আগে তিনি শপথের আগের দিন মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

হোয়াইট হাউসের সূত্রটি আরো বলেছে, ট্রাম্প তাঁর বিদায়ী অনুষ্ঠান ওয়াশিংটনের বাইরের ঘাঁটি জয়েন্ট বেইজ অ্যান্ড্রুজে করার পরিকল্পনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানের সদর দপ্তর এই ঘাঁটিতে। জয়েন্ট বেইজ অ্যান্ড্রুজে বিদায়ী অনুষ্ঠান শেষে ট্রাম্প ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পাম বিচে উড়ে যাবেন। সেখানে তাঁর মার-এ-লাগো রিসোর্টে তিনি পরবর্তী জীবন শুরু করবেন।

এদিকে ট্রাম্পকে গত সপ্তাহে অভিশংসিত করেছে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো প্রেসিডেন্ট নজিরবিহীনভাবে দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসনের শিকার হলেন।

গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেয় প্রতিনিধি পরিষদ।

এর আগে ২০১৯ সালে ইউক্রেন কেলেঙ্কারির কারণে কংগ্রেসে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রথম দফায় অভিশংসন করা হয়েছিল।

নিয়ম অনুযায়ী প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংনের প্রস্তাব পাশের পর তা যাবে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে। তবে তা ২০ জানুয়ারির আগে হবে না বলে এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককোনেল। সিনেটেও ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

এদিকে রীতি অনুযায়ী হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে জো বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেনকে চা চক্রে আমন্ত্রণ জানানোর প্রটোকলও ভাঙতে যাচ্ছেন ট্রাম্প।

তবে শপথ নেওয়ার আর মাত্র পাঁচদিন বাকি থাকতে বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে গতকাল শুক্রবার টেলিফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচনের দুই মাসেরও বেশি সময় পর কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পেন্স এবং তাঁকে সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাইডেন প্রশাসনকে প্রথম দিন থেকেই বহুবিধ সংকট মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হোঁচট খাওয়া জাতীয় টিকাদান প্রকল্প, ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়া চালিয়ে নেওয়া।

হোয়াইট হাউসের নতুন প্রেস সেক্রেটারি জেন পাসাকি গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন, কেবিনেটের নিয়োগ নিশ্চিতের পাশাপাশি অভিশংসন প্রক্রিয়া চালিয়ে নিতে সিনেট সক্ষম।