বিমানবন্দর বন্ধ, সীমান্তের দিকে ছুটছে শঙ্কিত আফগানরা
আফগানিস্তানে বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় দেশটি থেকে পালানোর চেষ্টায় লোকজন সীমান্তগুলোতে গিয়ে জড়ো হচ্ছেন। তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর দেশটিতে প্রশাসনিক শূন্যতা দেখা দিয়েছে। মানবিক সংকটের শঙ্কার মধ্যে কীভাবে সাড়া দেওয়া যায় তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিদেশি দাতারা।
যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার পর ব্যাংক, হাসপাতাল ও সরকারি প্রশাসন সচল রাখায় মনোনিবেশ করছে তালেবান। এরই মধ্যে বুধবার ব্যাংকগুলোতে লম্বা লাইন দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সোমবার গভীর রাতে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ও তাদের মিত্ররা দেশটি ছেড়ে চলে গেছে। যাওয়ার আগে নিজ ও অন্য দেশের নাগরিক এবং ঝুঁকিতে থাকা বহু আফগানকে আকাশপথে উড়িয়ে নিয়ে গেছে তারা। কিন্তু তারপরও ঝুঁকিতে থাকা বহু আফগান কাবুল বিমানবন্দরের সামনে রয়ে যায়।
এখন কাবুল বিমানবন্দর অকার্যকর থাকায় যেসব আফগান তালেবানের প্রতিশোধের শঙ্কায় আছেন তাদের নিরাপদে সীমান্তে পৌঁছে দেওয়ায় সহায়তা করতে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। চারদিকে স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের সঙ্গে ইরান, পাকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সীমান্ত রয়েছে।
খাইবার গিরিপথের পূর্ব পাশে পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং তোরখামে একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা বলেন, ‘আফগানিস্তানের পাশে বিপুল সংখ্যক লোক সীমান্তের গেইট খোলার অপেক্ষায় আছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তান ও ইরানের মধ্যে থাকা ইসলাম কালা সীমান্ত পোস্টেও কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে।
ইরানের সীমান্ত পার হওয়া আটজন আফগানের একটি দলের একজন বলেন, ‘আগের তুলনায় আফগানদের ইরানে ঢুকতে দেওয়ার বিষয়ে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীগুলো কিছুটা নমনীয় মনে হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র কাবুল থেকে আকাশপথে এক লাখ ২৩ হাজারের বেশি লোককে সরিয়ে নিলেও আরো প্রায় লাখো মানুষ পেছনে পড়ে ছিলেন। শুধু জার্মানির হিসাবেই নিজেদের বিপন্ন অনুভব করলে জার্মানি চলে যাওয়ার অধিকার রাখেন আফগানিস্তানের উন্নয়ন সংস্থাগুলোতে কাজ করা ১০ থেকে ৪০ হাজার আফগান কর্মী।
সোমবার এক প্রস্তাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যারা আফগানিস্তান ছাড়ার চেষ্টা করছে তাদের নিরাপদে দেশটি ছাড়ার অনুমতি দিতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তবে প্রস্তাবে কোনো ‘সেইফ জোন’ তৈরির কথা বলা হয়নি, যার পক্ষে ছিল ফ্রান্স।