ভূমিকম্পে তুরস্কে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে?
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ধাক্কা কাটাতে তুরস্কের কতটুকু ক্ষতি হয়েছে, এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
একটি ব্যবসায়িক গ্রুপের বরাতে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলছে, এই ভূমিকম্পে আঙ্কারার সম্ভাব্য ক্ষতি আট হাজার ৪১০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে তুরস্কের সরকারি কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ হাজার কোটি ডলার।
কয়েক দফায় গত সোমবারে (৬ ফেব্রুয়ারি) সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার ছুঁইছুঁই। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। তবে, এখন মনোনিবেশ করা হচ্ছে জীবিতদের আশ্রয়, খাদ্য ও মনস্তাত্ত্বিক দিকে।
রয়টার্স বলছে, সপ্তাহান্তের ক্ষয়ক্ষতির একটি হিসেব প্রকাশ করেছে তুর্কি এন্টারপ্রাইজ ও বিজনেস কনফেডারেশন। তাদের মতে, ভূমিকম্পে ক্ষতি আট হাজার ৪১০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো মেরামতে খরচ হবে সাত হাজার ৮০ কোটি ডলার। সরকারি আয়ে ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার ৪০ কোটি ডলার। এ ছাড়া কর্মদিবসের ক্ষতি ২৯০ কোটি ডলার।
ব্যবসায়িক গোষ্ঠীটি বলছে, প্রধান খরচ হবে আবাসন, ট্রান্সমিশন লাইন ও অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে। হাজার হাজার গৃহহীনদের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী আশ্রয়ের চাহিদা মেটাতে।
এদিকে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোয়ান বলেছেন, এক বছরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার আবাসন ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা হবে। দেশকে পুনরায় দাঁড় করাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, তুরস্কের ১০ প্রদেশের এক কোটি ৩৪ লাখ বাসিন্দা ভূমিকম্পে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ। এই সংখ্যা তুরস্কের মোট জিডিপির ১০ শতাংশ।
গতকাল রোববার আরব ফিসক্যাল ফোরামে আইএমএফের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ মহিলদিন বলেন, ‘এই ভূমিকম্প তুরস্কের জিডিপিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলবে, যেমনটা ১৯৯৯ সালে হয়েছিল। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই প্রভাবটা সামনে আসবে। তবে, সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরে নতুন বিনিয়োগ জিডিপিকে কিছুটা এগিয়ে নিতে পারে।’
২০২২ সালে তুরস্কের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল পাঁচ শতাংশ। এই বছরে অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্ভাবাস দিয়েছিল তুর্কি কর্তৃপক্ষ। ভূমিকম্পের ফলে চলতি বছরে তুরস্কের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুই শতাংশ কমে যেতে পারে বলে ধারণা অর্থনীতিবিদ ও সরকারি কর্তাদের।