‘যুক্তরাজ্যের মতো ছড়ালে ভারতে ওমিক্রনে দৈনিক সংক্রমণ হতে পারে ১৪ লাখ’
ভারতে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়্যান্ট ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে দেশটির এক শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, ইংল্যান্ড বা ফ্রান্সের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতে যে গতিতে ওমিক্রনের সংক্রমণ হচ্ছে, তেমন গতিতে ভারতে সংক্রমণ হলে প্রতিদিন ১৩ থেকে ১৪ লাখ মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় বলেছে, ওমিক্রনের সংক্রমণ সে দেশে উদ্বেগের একটা পর্ব। যদিও ভারতে এখনও ওমিক্রনের সংক্রমণ সেভাবে শুরু হয়নি। তবে এরই মধ্যে ভারত সরকার উল্লেখ করেছে, ইউরোপে কোভিড মহামারির নতুন পর্ব শুরু হয়েছে।
ভারতের কোভিড টাস্ক ফোর্সের প্রধান ড. ভিকে পাল বলেছেন, ‘আমরা যদি যুক্তরাজ্যের সংক্রমণের হার দেখি, তাহলে দেখা যাবে—বিপুল মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ভারতেও যদি একই ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে আমাদের দেশের জনসংখ্যা বিবেচনায় দৈনিক ১৪ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে।’
ওমিক্রনের সংক্রমণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। এ ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রমণে একের পর এক নতুন রেকর্ড গড়ছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে গত শুক্রবার ৯৩ হাজার ৪৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে সে দেশের সরকার। এ নিয়ে যুক্তরাজ্যে পরপর তৃতীয় দিন কোভিড-১৯-এ দৈনিক আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হলো। এর আগে দেশটিতে গত বৃহস্পতিবার ৮৮ হাজার ৩৭৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল সরকার। তার আগে গত বুধবার আক্রান্ত হয়েছিল ৭৮ হাজার ৬১০ জন।
ভারতও পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে এবং স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত সংকট দেখা দিলে তা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উৎসব-অনুষ্ঠান ছোট পরিসরে সব ধরনের সতর্কতা মেনে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গণজমায়েত নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রণায়ের যুগ্ম-সচিব লব আগরওয়াল বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে সাফল্য এসেছে, তা ধরে রাখতে হবে। ভারতে এখন পর্যন্ত ওমিক্রন সংক্রমণের যে ঘটনাগুলো ধরা পড়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে হয় বিদেশে যাতায়াতের রেকর্ড রয়েছে কিংবা বিদেশে যাত্রাকারীদের সংস্পর্শে আসার রেকর্ড রয়েছে।
এ ছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভারতে ওমিক্রনের গোষ্ঠী সংক্রমণের খবর নেই। ভারতে যে ২৪ জেলায় করোনা সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের বেশি, সে জেলাগুলোতে সে সংখ্যা না কমা হওয়া পর্যন্ত বিধিনিষেধ-সংক্রান্ত ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।
ভিকে পল বলেছেন, উদ্ভূত সম্ভাব্য পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। সেইসঙ্গে সতর্কতা বজায় রেখে চলতে হবে।