যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের ১০০ দিন আগে মরিয়া ট্রাম্প

জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী পায়ের তলায় মাটি হারাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আগামী ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয়ের আশঙ্কায় ট্রাম্প নিজের প্রচার অভিযানকে আরো চাঙ্গা করার চেষ্টা শুরু করেছেন। সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
আর ঠিক ১০০ দিন বাকি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প কি দ্বিতীয় দফায় জিততে পারবেন? নাকি হোয়াইট হাউসে তাঁর দ্বিতীয় ইনিংস হাতছাড়া হয়ে যাবে? করোনা সংকট ও অর্থনীতির ওপর সে সংকটের মারাত্মক প্রভাবের মাঝে কার্যত সব জনমত সমীক্ষায় ট্রাম্প তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের চেয়ে বেশ পিছিয়ে রয়েছেন। তবে ভোটারদের মতিগতি বুঝতে এমন সমীক্ষা যে নির্ভরযোগ্য নয়, চার বছর আগের নির্বাচনে তা আবার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সে সময় ডেমোক্র্যাট দলের হিলারি ক্লিনটন আপাতদৃষ্টিতে এগিয়ে থেকেও নির্বাচনে ট্রাম্পের কাছে হেরে যান। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে।
গতকাল রোববার ট্রাম্প ভোটারদের মন জয় করতে প্রচার শুরু করেন। তাঁর মতে, ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ' ভোটাররাই তাঁকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবেন। জনমত সমীক্ষায় খারাপ ফল সত্ত্বেও দমে যাওয়ার পাত্র নন ট্রাম্প।
এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প দাবি করেন, অনেকের মতে তাঁর প্রচারে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অনেক প্রচার অভিযানের সময়ে দেখা যায়নি। এমনকি তাঁর মতে, ২০১৬ সালে তাঁর নিজের প্রচারকেও ম্লান করে দিচ্ছে ২০২০ সালের অভিযান।
এতকাল প্রতিপক্ষ বাইডেনের ভাবমূর্তি খর্ব করতে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিলেন না, এমন অভিযোগ খণ্ডন করতে ট্রাম্প গতকাল রোববার তীব্র ভাষায় সে ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “বাইডেনের প্রচারে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ’ ভোটাররা ৩ নভেম্বর কথা বলবেন। ভুয়া সমীক্ষা ও ভুয়া খবর র্যাডিকাল বাম শক্তিকে বাঁচাতে পারবে না।”
অন্যদিকে বাইডেনও হাত গুটিয়ে বসে নেই। করোনা সংকটের কারণে জনসমক্ষে তেমন উপস্থিত থাকতে না পারলেও তিনি নেপথ্যে যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছেন। বাইডেনের দাবি, তিনি ‘আমেরিকার আত্মা’র জন্য লড়াই করছেন। তিনি ভোটারদের উদ্দেশে ট্রাম্পের ক্ষমতা একটি কার্যকালেই সীমিত রাখার ডাক দিয়েছেন। বাইডেন এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘আর ১০০ দিন পর আমাদের দেশকে নতুন পথে চালিত করার সুযোগ আসছে। যে পথে আমরা আমাদের উচ্চতম আদর্শ পূরণ করতে পারি এবং সব মানুষ সাফল্যের ন্যায্য সুযোগ পায়।’
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চরিত্র করোনা সংকটের কারণে আমূল বদলে গেছে। ভিড়ে ঠাসা জনসভার ঝুঁকি এড়াতে বাইডেন শুরু থেকেই ডিজিটাল মাধ্যমকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ট্রাম্প করোনাভাইরাসের পরোয়া না করে বেশ কয়েকটি জনসভা আয়োজন করলেও বর্তমানে পিছিয়ে এসেছেন। সংক্রমণ ছড়ানো থেকে শুরু করে যথেষ্ট ভিড় না হওয়ায় জনসভাগুলোকে ঘিরে অনেক বিতর্ক হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে ট্রাম্প নিজের প্রচার অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজারকে সরিয়ে দেন। ডাকযোগে ব্যালট সম্পর্কে তাঁর সংশয় ও বারবার সতর্কবার্তার ফলেও ট্রাম্পের মনে আতঙ্ক ফুটিয়ে তুলছে বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন। তার ওপর যেসব রাজ্যে তিনি ২০১৬ সালে জয়লাভ করেছিলেন, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি রাজ্যে তিনি পিছিয়ে পড়েছেন। তাই মরিয়া হয়ে ডিজিটাল প্রচারে মনোযোগ দিচ্ছেন ট্রাম্প।