যুক্তরাষ্ট্র ও দ. কোরিয়ার সামরিক মহড়ার মুখে উ. কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করার কয়েক ঘণ্টা আগে উত্তর কোরিয়া একটি সাবমেরিন থেকে দুটি কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। উত্তর কোরিয়া বলছে, এই সামরিক মহড়া হচ্ছে যুদ্ধের মহড়া, তাই অস্ত্র পরীক্ষা করাটা তাদের প্রতিরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ মার্চ) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কিম জং উন বেশ কিছু অস্ত্র পরীক্ষার কাজ তদারকি করার কয়েকদিন পরে এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপন করা হলো। এ সময় কিম তার সৈন্যদের প্রতি প্রতিদ্বন্দ্বিদের ‘উন্মত্ত যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ’ নেওয়ার নির্দেশ দেন। খবর আলজাজিরার।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি গণমাধ্যম কেসিএনএ বলেছে যে, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের মাধ্যমে পিয়ংইয়ং ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ও দক্ষিণ কোরিয়ার পুতুল বাহিনীর’ তথাকথিত সামরিক কৌশলের ‘অপ্রতিরোধ্য শক্তির প্রতি’ প্রতিক্রিয়া জানাতে সংকল্পবদ্ধ।
কেসিএনএ আরও ইঙ্গিত করে যে, উত্তর কোরিয়ার লক্ষ্য হল বিস্ফোরক দিয়ে পরীক্ষা করা ক্রুজ পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে সজ্জিত করে রাখা। পিয়ংইয়ং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সামরিক মহড়াকে আক্রমণের মহড়া হিসাবে দেখে। তাই তার পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী সোমবার দিনের প্রথম ভাগে তাদের ‘ফ্রিডম শিল্ড’ মহড়া শুরু করেছে। ২০১৮ সালের পর এইবারের বড় আকারের মহড়া এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন তারা উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণকে সুরক্ষিত করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা স্থগিত করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর মতে, এই মহড়া কমপক্ষে ১০ দিন ধরে চলবে এবং উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক হুমকির মধ্যে ‘পরিবর্তনশীল নিরাপত্তা পরিবেশের’ উপর দৃষ্টি রাখবে।
উত্তর কোরিয়া ২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে এবং একটি ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক পারমাণবিক মতবাদ গ্রহণ করেছে। এ প্রসঙ্গে সিউলের ইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিফ-এরিক ইজলি তার ইমেইলে করা মন্তব্যে বলেছেন, ‘সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা উত্তর কোরিয়ার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের উপর অবশ্যই একটি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু পিয়ংইয়ং সম্ভবত অতিরঞ্জিত করে বলছে যে তারা ইতোমধ্যে পারমাণবিক ওয়ারহেড দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত করেছে। বাস্তবতা হল উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের খুব কম খাবার দেওয়া হয় এবং তাদের দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণে কৃষকদের সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে’।
কেসিএনএ জানিয়েছে যে, সর্বশেষ পরীক্ষায় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উড়ে দেশের পূর্ব উপকূলের জলরাশির উপর আট-আকৃতির প্যাটার্ন তৈরি করে এবং ১৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।