রাজাকে অপমানের অভিযোগে থাই ব্যক্তির ৩ বছরের জেল
থাইল্যান্ডের রাজাকে অপমানের অভিযোগে দেশটির এক ক্যালেন্ডার বিক্রেতাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। ওই ক্যালেন্ডারগুলোতে রাজাকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য ও গণতন্ত্রপন্থীদের প্রতীকী হলুদ বর্ণের রাবারের হাঁস ছিল বলে অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটরদের। তাদের দাবি, ওই ক্যালেন্ডারের মন্তব্য ও হলুদ বর্ণের হাঁসের জন্য রাজার মানহানি হয়েছে। আজ বুধবার (৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির নাম নারার্থন চোটমানকংসিন। ২৬ বছর বয়সী এই যুবককে থাই রাজাকে অপমানের দোষে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
২০২০ সালে থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়। এ বিক্ষোভ দমাতে বিতর্কিত ‘লেসে-ম্যাজেস্টি’ নামে আইন ফের চালু করে দেশটি। এ আইনের আওতায় রাজা বা রাজপরিবারের কোনো সমালোচনা করা যাবে না। এই আইনে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ ১৫ বছরের সাজার বিধান রয়েছে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত এই আইনের আওতায় ২০০ এর অধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ আইনের মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা হরণ হচ্ছে বলে অভিযোগ বিশ্লেষকদের।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে নারার্থনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গণতন্ত্রপন্থীদের পেজ রাতাসাডোনে ওই ক্যালেন্ডার বিক্রির জন্য পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি। ওই পোস্টের ক্যাপশনে একটি বিতর্কিত বাক্য ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রসিকিউটরদের দাবি, ওই হাঁসের ছবি ও ক্যাপশন অপমানজনক। আর এতে রাজা মাহা ভাজিরালংকমের মানহানি হয়েছে।
গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের একটি আদালত এ রায় দেয়। এর আগে একই মামলায় নারার্থনের দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়। তবে, মঙ্গলবার সেই সাজা বাড়িয়ে তিন বছর করা হয়।
সমালোচনাকরীদের সাজার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)। সংস্থাটি থেকে বলা হয়, এ রায়ের মাধ্যমে বোঝা যায়, রাজতন্ত্র বিরোধীদের যে কোনো সাজা দেওয়া হচ্ছে।
এইচআরডাব্লিউর এশিয় অঞ্চলের পরিচালক এলিয়ানি পেয়ারসন বলেন, ‘এই সাজা থাই নাগরিকসহ গোটা বিশ্বে একটি বার্তা দেয়। সেই বার্তাটি হলো- থাইল্যান্ড গণতন্ত্র থেকে অনেক দূরে রয়েছে।’