রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া : এক মিনিট নিরব ব্রিটেন
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে শেষবারের মত শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ব্রিটেনে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়েছে। খবর বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ানের।
স্থানীয় সময় রোববার রাত আটটায় এ নিরবতা পালন করা হয়। এ সময়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে কালো পোশাকে জাতীয় ভাবে নিরবতা পালনের এ আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। এর আগে তাঁর ছেলে রাজা তৃতীয় চার্লস বাকিংহাম প্যালেসে বিশ্বনেতাদের স্বাগত জানান।
যেসব বরেণ্য বিশ্ব নেতা ওয়েস্ট মিনিস্টার হলে রাখা রানির কফিনে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাদের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁও রয়েছেন।
শোক বইতে স্বাক্ষর শেষে বাইডেন রানিকে ভদ্র ও শ্রদ্ধেয় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যসহ আমাদের সবার হৃদয়ে আপনি রয়েছেন। আমরা আজ সবাই এখানে। তার জন্যই বিশ্ব অনেক ভালো অবস্থানে আছে।’
গত ৮ সেপ্টেম্বর বালমোরাল প্রাসাদে ৯৬ বছর বয়সি রানি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি রাজমুকুট মাথায় পরেন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যের চূড়ান্ত পর্বটি আজ সোমবার সম্পন্ন হবে। এটি শুধু যুক্তরাজ্যের জাতীয় শোক প্রকাশের উপলক্ষ নয়, বরং একই সঙ্গে হয়ে উঠছে সাম্প্রতিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক সমাবেশ।
যে রাজকীয়, ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ ও আড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে রানির শেষবিদায় জানানোর আয়োজন করা হয়েছে, তাকে নজরকাড়া বললেও কম হবে। জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের বিশালত্ব ও তার সুচারু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যুক্তরাজ্য কার্যত তার বিশেষ পরিচিতির বৈশিষ্ট্য বা ব্রিটিশ শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করছে।
রানির শেষকৃত্যের আয়োজনটিতে বিভিন্ন দেশের সম্রাট, বাদশাহ, রাজা-রানি, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীদের যেমন মহামিলন ঘটছে, তেমনই একে জাতীয় ঐক্যের স্বাক্ষর হিসেবে প্রতিষ্ঠার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
গতকাল রাতে আমন্ত্রিত রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা প্রথমবারের মতো একত্র হয়েছেন বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের আমন্ত্রণে এক সংবর্ধনায়। আর আজ মৃত্যুর দ্বাদশ দিনে তাঁরা অংশ নেবেন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানির জন্য আয়োজিত রাষ্ট্রীয় প্রার্থনায়।
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে গির্জায় ধারণক্ষমতা দুই হাজার। তাই পাঁচ শতাধিক বিদেশি অতিথির বাইরে অন্যদের সেখানে প্রবেশাধিকার সীমিত থাকবে। তবে যেখানে রানির মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়েছিল সেই ওয়েস্টমিনস্টার হল থেকে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নেওয়া এবং লন্ডন থেকে তাঁর নির্ধারিত সমাধিস্থল উইন্ডসর ক্যাসলে নেওয়ার পথে বিপুল জনসমাগম ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউরোপ ও আরব দেশগুলোর রাজা-বাদশাহ, জাপানের সম্রাট ও বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টসহ শতাধিক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের জন্য যে ধরনের নিরাপত্তা প্রয়োজন, তার ব্যবস্থা করতে লন্ডনে যেমন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়েছে, তেমনই সর্বসাধারণের অংশগ্রহণ ও চলাচলের সুযোগও বহাল রাখতে হয়েছে।