সু চি ও অন্য নেতাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান
মিয়ানমারের ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি দল মঙ্গলবার দেশটির আটক নেত্রী অং সান সু চি এবং অন্য নেতাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার একদিন পর দলটি এ আহ্বান জানাল।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, দাপ্তরিক ফেসবুক পেজে দেওয়া বার্তায় দলটি প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর সু চিসহ সব বন্দিকে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারের ২৪ মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নতুন নিয়োগ পাওয়া মন্ত্রীদের বেশির ভাগই সেনা কর্মকর্তা বলে জানা গেছে। দেশটিতে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের প্রথম দিনেই ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চির সরকারের বেশির ভাগ সদস্যকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং বিবিসি বার্মিজ বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, সু চি সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন ১১ জন মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে। নতুন মন্ত্রীদের বেশির ভাগই জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা। কয়েকজন রয়েছেন সেনা সমর্থিত দল ইউএসডিপির সদস্য। ইউএসপিডির অন্যতম নেতা উনা মং লউনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি গত নভেম্বরের নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন।
সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন এমডব্লিউডিতে নতুন এসব নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এক বিবৃতিতে বাইডেন প্রশাসন বলেছে, ‘গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের ফলাফল মুছে দিয়ে সামরিক বাহিনী যেন জনগণের অভিপ্রায়কে ভূলুণ্ঠিতের চেষ্টা না করে।’
গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত কয়েক বছরে মিয়ানমারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই নিষেধাজ্ঞা ফের পুনর্মূল্যায়ণ করা হতে পারে জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিবৃতিতে বলেন, ‘গণতন্ত্র যেখানেই হামলার শিকার হবে সেখানেই তা রক্ষায় এগিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।’
এর আগে জাতিসংঘ এবং যুক্তরাজ্যও সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিসহ নির্বাচিত সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করে গতকাল সোমবার দেশটির ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। গত নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ক্ষমতা দখলে নেয় সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, সু চির দল এনএলডি অনিয়ম করে ওই নির্বাচনে একচেটিয়া জয়লাভ করেছে।
সুষ্ঠু নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করেছে শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা।
সরকারের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটকের পর গতকাল সোমবার দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক ভিডিও বার্তায় দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।