মৃত্যুপুরীতেও তারা বেঁচে, দেখে অবাক মানুষও
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/02/03/photo-1486143908.jpg)
বেশ কয়েকটা মাস ইরাকের মসুলের ওপর দিয়ে গিয়েছে ঝড়-ঝাপটা। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা এলাকাটি দখল করে রাখে। আর এলাকাটি ফিরে পেতে বিরোধীরাও যুদ্ধ চালিয়ে যায়। এমন একটা পরিস্থিতিতে চিড়িয়াখানার জন্তুর খবর কে রাখে? যেখানে মানুষের জীবনেরই কোনো মূল্য নেই!
মসুলের চিড়িয়াখানার খবর নেওয়ারও কেউ ছিল না। যুদ্ধ শেষ। আইএস বিতাড়িত হয়েছে। মসুলের ওই চিড়িয়াখানায় একটি ভালুক আর একটি সিংহ এখনো বেঁচে আছে। চিড়িয়াখানায় প্রাণী বলতে ওই দুটিই। ভীত, সন্ত্রন্ত চোখে তাকিয়ে থাকে খাঁচার বাইরে। নিজেরাও দেখেছে গুলিতে মরেছে চিড়িয়াখানার অন্য সব প্রাণী!
‘মসুল আই’ নামে এক ব্লগারের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সিএনএন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসুল এখন শান্ত। আইএস পিছু হটেছে। শান্ত ও স্বাভাবিক হয়ে আসছে মসুলের জীবন। আর তখনই মানুষের মনে পড়েছে চিড়িয়াখানাটির কথা। মানুষ এসে দেখে বন্দি ওই দুই প্রাণীর ভীত চেহারা।
মসুলে টাইগ্রিস নদীর তীরে ওই চিড়িয়াখানার অবস্থান। ২০১৪ সালের আগে আইএস দখলের আগে মোটামুটি সুখেই ছিল চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো। পরে আইএস ওই চিড়িয়াখানাতেই সামরিক ঘাঁটি করে। এর পর থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলি, নির্মমতার সাক্ষী হয় ওই চিড়িয়াখানা। এতে প্রচুর বানর, খরগোশসহ অন্যান্য প্রাণী ছিল। সবগুলোকেই মেরে ফেলা হয়। যুদ্ধের একেবারে শেষ দিকে একটা সিংহীও মারা যায়।
গত জানুয়ারি মাসে শান্ত হয়ে আসে মসুল। বাসিন্দারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন আগের মতোই। তখনই তাঁরা দেখতে পান চিড়িয়াখানায় ওই ভালুক আর সিংহটি আছে। এতটা সময় তারা কীভাবে বেঁচেছিল সেটাই বিস্ময়ের! চার মাসেরও বেশি সময় খুব খারাপ অবস্থায় কাটাতে হয়েছে তাদের।
কঠিন সময়টা পার করে যখন বেঁচেই আছে ভালুক আর সিংহটি, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে চায় মসুলের বাসিন্দারা। এক কুর্দিশ ভদ্রলোক ওই দুই প্রাণীর খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।
ব্লগার ‘মসুল আই’ লিখেছেন, ‘যখন আপনি প্রাণীদের যত্ন নিতে শিখবেন এবং দয়া দেখাবেন, আপনি তখন জানতে পারবেন মানুষের জীবনের মূল্য।’