সাগরে ৮০ জনের মানববর্ম, বাঁচল ডুবন্ত পরিবার
যুক্তরাষ্ট্রে চলছে গ্রীষ্মকাল। প্রচণ্ড গরমে একটু শান্তি খুঁজতে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের সমূদ্র সৈকতে নেমেছিলেন একই পরিবারের কয়েকজন সদস্য। কিন্তু সেই আনন্দ স্নানই পরিণত হলো আতঙ্কে। স্রোতের টানে পরিবারের নয়জন ভেসে গেলেন গভীর সমুদ্রে। তবে পরে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে সৈকতে থাকা ৮০ জন। পানামাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
ঘটনা গত শনিবারের। রবার্তা উরস্রে নামের এক নারী গিয়েছিলেন ফ্লোরিডার মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চলের ওই সৈকতে। হঠাৎ তিনি খেয়াল করেন তাঁর দুই ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অগত্য তাদের খুঁজতে বের হন তিনি। পরে সাগরে দূর থেকে তাদের চিৎকার শুনতে পান রবার্তা।
সন্তানদের বাঁচাতে পরিবারে ছয় সদস্যদের নিয়ে পানিতে নামেন রবার্তা। কিন্তু পানিতে গিয়ে তারাও পড়েন স্রোতের ফাঁদে।
এদিকে একই সময় সৈকতে অবস্থান করছিলেন জেসিকা সিমন্স নামের এক নারী ও তাঁর স্বামী। হঠাৎ তিনি গোলমাল শুনতে পেলেন। দেখলেন সমুদ্রের দিকে নির্দেশ করে সবাই চিৎকার করছে। ডুবন্ত ওই লোকদের উদ্ধারে তখনই পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন জেসিকা। আর সাঁতার কেটে এগিয়ে গেলেন তাদের দিকে।
ঘটনাস্থালে থাকা সবাইকে জেসিকা চিৎকার করে বলেন, ‘এদের আমরা ডুবতে দেব না। এটা হবে না। আমরা তাদের উদ্ধার করব।’
একই সময় জেসিকার স্বামী সঙ্গে কয়েকজনকে নিয়ে সাগরের মধ্যে তৈরি করলেন একটি মানববন্ধন। প্রায় ৮০ জনের ওই মানব বন্ধন স্রোতের সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে গেল ডুবন্ত ওই নয়জনের কাছে। পরে স্রোতের ধাক্কায় ডুবন্ত নয় ব্যক্তি চলে এলো তীরের কাছে। তখনই মানববন্ধনে আটকে পড়ল তারা।
এই তাক লাগানো উদ্ধারকাজে আহত হননি কেউ। ডুবন্ত ওই নয় জনও প্রাণে বেঁচেছেন। তবে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন রবার্তার মা। এ ছাড়ার তাঁর এক নাতির হাতও ভেঙে যায়।
উদ্ধার হওয়ার পর রবার্তা বলেন, ‘আমি খুবই কৃতজ্ঞ। আমাদের যারা বাঁচিয়েছে তারা দেবদূত। একেবারে সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায় তারা উপস্থিত হয়েছে। আমাদের জীবনের জন্য তাঁদের কাছে ঋণী হয়ে থাকলাম। তাঁরা না থাকলে, আমরা বাঁচতাম না।’

অনলাইন ডেস্ক