রাখাইনে সাহায্যকারীদের যেতে দেওয়ার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা ও সহিংসতায় বাস্তুচ্যুত রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিমদের সহায়তার জন্য সেখানে মানবিক সাহায্যকারীদের প্রবেশ করতে দিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে দেশটি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের নিন্দাও জানিয়েছে।
রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর গত ২৫ অক্টোবর থেকে প্রায় এক লাখ ৬৪ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্মম হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ আর নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে সহায়-সম্বল হারানো এসব ‘দেশহীন’ শরণার্থীর ভাষ্যে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরাকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিথার নওয়ার্ট গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, রাখাইনে ব্যাপক হারে নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক সশস্ত্র লোকজন নির্বিচারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করছে। এর ফলে সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানুষের বাস্তুচ্যুতি ঘটছে।
‘আমরা আবারও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি সেখানকার স্থানীয় মানুষদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর পুনরায় হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতো আমরা আহ্বান জানাচ্ছি’, যোগ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের’ সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে।
মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ গত ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭০ জন ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, দুজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৪ জন সাধারণ নাগরিক।
মিয়ানমার সরকারের আরো দাবি, ‘বিদ্রোহী সন্ত্রাসীরা’ এখন পর্যন্ত রাখাইনের প্রায় দুই হাজার ৬০০ বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এখনো রাখাইন রাজ্যে থাকা মুসলিমদের মধ্যে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অনলাইন ডেস্ক