রাখাইনে অভিযানে সমর্থন চীনের

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাদের ওপর চলছে নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ। এর মধ্যেই আজ মঙ্গলবার সকালে দেশটির প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীন জানিয়েছে, রাষ্ট্রের ‘স্থিতিশীলতা রক্ষায়’ মিয়ানমারের যে অভিযান তাতে সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে চীনের।
রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক সহিংসতার পর বিশ্বে ব্যাপক চাপে রয়েছে মিয়ানমার। তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের প্রায় সব মানবাধিকার সংস্থা। এই সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়ে এই বিবৃতি দিল।
যুক্তরাজ্যের দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকা চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেং শুয়াংয়ের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে। তবে বিবৃতিতে রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে চীন। সঙ্গে এও বলেছে ওই রাজ্যে শান্তি রক্ষায় দেশপ্রেমিক সেনারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রচেষ্টায় মিয়ানমারে শান্তি ফিরে আসবে বলেও আশাবাদ জানিয়েছে চীন।
এদিকে চীনের সমর্থনের পর রাখাইন রাজ্যে অবিলম্বে এবং শর্তহীনভাবে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে রাজি করাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ব্যাপকভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। ফলে সেখানে মারাত্মক মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের’ সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। সেখান থেকে পালিয়ে আসার রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে গ্রামের পর গ্রামে হামলা-নির্যাতন চালাচ্ছে। নারীদের ধর্ষণ করছে। গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ গত ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭০ জন ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, দুজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৪ সাধারণ নাগরিক।
মিয়ানমার সরকারের আরো দাবি, ‘বিদ্রোহী সন্ত্রাসীরা’ এখন পর্যন্ত রাখাইনের প্রায় দুই হাজার ৬০০ বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এখনো রাখাইন রাজ্যে থাকা মুসলিমদের মধ্যে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।