জাপানে ভারি বৃষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৬

জাপানে স্মরণকালের ভয়াবহ বর্ষণে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৯২ জন।
আজ রোববার ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিগত তিন দিনের টানা ভারি বর্ষণে সৃষ্ট এই ভয়াবহ দুর্যোগে উদ্ধারকর্মীদের দ্রুততম সময়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিউশু ও শিকোকুর দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রধান দ্বীপগুলোতে ভয়ানক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছেন অধিবাসীরা। এসব এলাকায় রাতারাতি মৃতের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
টোকিওভিত্তিক সংবাদ সংস্থা কিয়োদো জানিয়েছে, দুর্যোগ আক্রান্ত এলাকাগুলো থেকে ৪৭ লাখের বেশি মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৃত, আহত আর আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে এসব এলাকায় দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগের পুলিশ ও দমকল বাহিনীর অন্তত ৪৮ হাজার সদস্য কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
জাপান সরকারের মন্ত্রিসভার প্রধান সচিব ইয়োশিহিদে শুগা বলেছেন, বেশির ভাগ নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে হিরোশিমা অঞ্চলের দক্ষিণাংশে। কিন্তু ঠিক কোন কোন জায়গায়, তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি।
বিগত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ এই বর্ষণে বন্যা ছাড়াও অব্যাহত ভূমিধসের ফলে, বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকাগুলোতে মানুষ চরম বিপদের মুখে পড়েছে। বন্যার পানি গাড়ি পর্যন্ত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়। দুর্গত এলাকাগুলোর অনেক জায়গায় মানুষ ডুবে যাওয়া বাড়িঘরের ছাদে আশ্রয় নিয়েছে।
অনেক জায়গায় পুরো গ্রাম পানির নিচে চলে গেছে। রাস্তাঘাট ডুবে কোথাও কোথাও পানির ওপরে শুধু ট্রাফিক বাতি দেখা যাচ্ছে।
কিছু কিছু এলাকায় বন্যার পানির কারণে স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হওয়ায় উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধারকাজে নৌকা বা হেলিকপ্টার ব্যাবহার করছেন।
পশ্চিমে জাপানে এই বন্যা পরিস্থিতির ফলে বুলেট ট্রেন সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে।
ডাইহাতসু, মিতসুবিশিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, দুর্যোগ আক্রান্ত এলাকার কারখানাগুলোতে তারা আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছে।
চলমান পরিস্থিতিতে দুর্গত এলাকাগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, কচি অঞ্চলে তিন ঘণ্টার বর্ষণে ২৬ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১৯৭৬ সালের পর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি।