ইন্দোনেশিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ১০
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/07/29/photo-1532836746.jpg)
ইন্দোনেশিয়ার একটি জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। এতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। অনেক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ রোববার ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন বিভাগের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৭টার কিছুক্ষণ আগে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার এই ভূমিকম্প পর্যটন এলাকা লমবক দ্বীপে আঘাত আনে। তখন অধিকাংশ মানুষই ঘুমিয়ে ছিলেন।
দুর্যোগ প্রশমন বিভাগের মুখপাত্র সুতোপো পুরউয়ো নুগ্রোহো একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘ভূমিকম্পে ৪০ জনের মতো আহত ও বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা, হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়বে। কারণ সব তথ্য এখনো আমাদের হাতে আসেনি।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, লমবকের সেনগিগির কাছে প্যানকেক হোটেলে ঘুমাচ্ছিলেন জন-পল ভোলাকার্ট নামের এক ব্যক্তি। ভূমিকম্প টের পেয়ে তিনি দ্রুত বিছানা ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন।
জন-পল ভোলাকার্ট বলেন, ‘উঠে আমি আশপাশে হাঁটাহাঁটি করছিলাম। কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন দেখলাম না। কিন্তু হোটেলের সামনের সুইমিংপুলের পানি দুলছিল একেবারে সাগরের ঢেউয়ের মতো। এটা ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত চলেছে।’ তিনি বলেন, ‘তবে গ্রামের লোকজনের বাড়িঘর হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে। এখানে তো এখন অনেক সকাল।’
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল লমবক দ্বীপের উত্তরাংশের মাতারাম শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে। এর গভীরতা ছিল ভূমি থেকে ৪ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার।
যেহেতু স্থলভাগে এই ভূমিকম্প হয়েছে, ফলে এর জন্য কোনো সুনামি সতর্কতা ছিল না। তবে ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প জরিপ কেন্দ্র (ইএমএসসি) জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫ মাত্রার।
সুতোপো পুরউয়ো নুগ্রোহো ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ের একটি ছবি টুইট করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি ভবনের ছাদ ও দেয়ালের একটি অংশ ধসে পড়েছে।
নুগ্রোহো জানান, ভূমিকম্পের পর আতঙ্কিত লোকজন রাস্তায় ও খোলা মাঠে অবস্থান নেয়। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে উদ্ধারকাজ চালানো। আহতদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের পরবর্তী সময়ে আরো ৬০ বারের বেশি ছোট ছোট কম্পন (আফটারশক) রেকর্ড করা হয়েছে। ছোট কম্পনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটি ছিল ৫ দশমিক ৭ মাত্রার।
ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বালি দ্বীপেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। পর্বতারোহীদের কাছে জনপ্রিয় পাশের রিনঝনি ন্যাশনাল পার্কেও এই কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিধসের আশঙ্কায় ভূমিকম্পের পর পরই পর্বতারোহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন বিভাগ।
স্থানীয় মেট্রো টিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পটি যখন প্রথম আঘাত আনে, তখন লোকজন ঘুমিয়ে ছিল। তারা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। ভূমিকম্প-পরবর্তী ছোট ছোট কম্পনের শঙ্কায় তারা বাড়িঘরের বাইরে অপেক্ষা করছিল।