খাসোগি হত্যার নির্দেশদাতা সৌদি যুবরাজ
তদন্ত শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ দাবি করেছে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার নির্দেশ এসেছিল সৌদি আরবের ক্ষমতাধর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছ থেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সিআইএ ফোনকলের অডিও রেকর্ড বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভাই খালিদ বিন সালমান খাসোগিকে ফোন করে কনস্যুলেটে আসতে বলেছিলেন। ভাইয়ের নির্দেশে খালিদ খাসোগিকে ফোন করেছিলেন বলে সিআইএর বরাতে বলেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
যুবরাজ মোহাম্মদের ছোট ভাই খালিদ বিন সালমান অবশ্য টুইট বার্তায় ওয়াশিংটন পোস্টের দাবিকে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ফোনে খাসোগির সঙ্গে আমার কথাই হয়নি। সর্বশেষ ২০১৭ সালে খুদেবার্তা বিনিময়ে তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছিল।’
রয়টার্স তাদের সূত্রের বরাতে বলছে, সিআইএ এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসকে ব্যাখ্যা দিয়েছে। মোহাম্মদ বিন সালমান খাসোগি হত্যায় জড়িত ছিলেন না, সৌদি সরকারের এমন বক্তব্যের সঙ্গে মার্কিন কংগ্রেসও একমত নয়।
তবে এতকিছুর পরও ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের পর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ‘ভরসাকেন্দ্র’ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ব্যস্ত ঠিক এমন সময়ে এই তথ্য এলো।
সৌদি যুবরাজের সরাসরি জড়িত থাকার দাবি করা সিআইএর তদন্তের এই ফলাফল নিয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট। রয়টার্স এ নিয়ে হোয়াইট হাউস এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের বক্তব্য জানতে চাইলে সেখানকার কেউ মুখ খুলতে চায়নি। তবে ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাসের একজন মুখপাত্র এই দাবিকে ‘অতিরঞ্জিত ও মিথ্যা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
সৌদি সরকারের, বিশেষ করে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলামলেখক সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি এক তুর্কি নারীকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর সেখানে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
সৌদি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই খাসোগি হত্যার নির্দেশ এসেছে বলে এর আগেই জানিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তবে তিনি বিশ্বাস করেন না যে বাদশাহ সালমান এই নির্দেশ দিয়েছেন।