রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়, তুরস্ককে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/04/04/photo-1554354662.jpg)
রাশিয়ার কাছ থেকে বিশেষ এক ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র কেনাটা পছন্দ করছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে তুরস্ককে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স নিজেই তুরস্ককে এ ব্যাপারে সতর্ক করলেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ খবর জানা যায়।
বিমানবিধ্বংসী এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি। এ ক্ষেপণাস্ত্রটি নিজেদের যুদ্ধবিমানের জন্য হুমকি মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে নিজেদের এফ-৩৫ বিমানের জন্য ক্ষেপণাস্ত্রটি হুমকি বলে মনে করে দেশটি। রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র একই সঙ্গে ৮০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম।
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরীয় দেশগুলোর জোট ন্যাটোর ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ওয়াশিংটনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাইক পেন্স বলেন, ‘তুরস্ককে অবশ্যই বেছে নিতে হবে সে ন্যাটো জোটের অন্যতম প্রধান সদস্য হিসেবে থাকতে চায় নাকি বেপরোয়া সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এ অংশীদারিত্বকে হুমকির মুখে ফেলতে চায়।’
মাইক পেন্স বলেন, ‘তুরস্ক কি ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক জোটের অংশ থাকতে চায়, নাকি আমাদের এ জোটকে অবজ্ঞার মধ্য দিয়ে নিজেদের অংশীদারিত্বকে জলাঞ্জলি দিতে চায়?’
তুরস্কের ক্ষেপণাস্ত্র কেনা নিয়ে উত্তেজনার ভেতর এরই মধ্যে দেশটির সঙ্গে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান-সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র চায়, তুরস্ক রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের বদলে তাদের প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় করুক।
এ ছাড়া ন্যাটোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বারবার বলে আসছেন, রাশিয়ার সমরাস্ত্র ন্যাটো জোটের সমরাস্ত্রের সমকক্ষ নয়।
এদিকে তুরস্ক জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের ক্ষেপণাস্ত্র কেনার এ চুক্তি ও অগ্রিম অর্থ প্রদান এরই মধ্যে হয়ে গেছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু পুনর্ব্যক্ত করেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে হওয়া প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলারের এ চুক্তি বাতিল করা হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক পোস্টে তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে বেছে নিতে হবে—দেশটি কি তুরস্কের মিত্রপক্ষে থাকতে চায়, নাকি শত্রুর বিরুদ্ধে ন্যাটোর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিয়ে তুরস্কের সঙ্গে মিত্রতাকে হুমকির মুখে ফেলতে চায়?’
শুধু তাই নয়, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কেনার সপক্ষে আঙ্কারা জানায়, কুর্দি বিদ্রোহী ও ইসলামী জঙ্গি মোকাবিলায় নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করতেই তাদের এটি কেনা প্রয়োজন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের ফলে তুরস্ক রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করছে।
ন্যাটোভুক্ত ২৯ দেশের মধ্যে তুরস্কের সেনাবাহিনী দ্বিতীয় বৃহত্তম। সোভিয়েত ইউনিয়ন আমলে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষার স্বার্থে এ জোট গঠন করা হয়।
এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান এ উত্তেজনার ব্যাপারে রাশিয়া এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।