‘জীবন্ত ঈশ্বর’ পরিণতি নিলেন থাই রাজা

বৌদ্ধ ধর্মীয় ও হিন্দু ব্রাহ্ম রীতি সম্পন্ন করে শনিবার নিজের ‘জীবিত ঈশ্বর’ পরিণতি বরণ করেছেন থাইল্যান্ডের নতুন রাজা মহা ভজিরালংকর্ন।
২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন ভজিরালংকর্নের বাবা রাজা ভুমিবল আদুলাদেজ। এর পরই সিংহাসনে বসেন তাঁর ছেলে। ৭০ বছর রাজ্য পরিচালনা করে সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময়ের জন্য রাজা ছিলেন ভুমিবল।
রাজপরিবারের নিয়মানুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক শোক শেষে শনিবার ব্যাংককের রাজপ্রাসাদে স্বর্ণ ও হীরা খচিত মুকুট পরে সিংহাসনে আরোহণ করেন মহা ভজিরালংকর্ন। সিংহাসনটি নয়স্তরের স্বর্ণের চালার নিচে বসানো।
বৌদ্ধ ধর্ম ও হিন্দু ব্রাহ্মরীতির মিশেলে শত শত বছর ধরে থাই রাজসিংহাসনে আরোহণ আয়োজন করা হয়ে থাকে। রাজা ভজরিলংকর্ন যেসব উপাধিতে ভূষিত হবেন তার মধ্যে ১৭৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘চক্রি রাজ্যে’র দশম রাজা উপাধিও রয়েছে। শনিবারের অভিষেক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিজেকে ‘দেবরাজা’ বা দেবতাদের স্বর্গীয় দূতে পরিণত করেন।
সিংহাসনে আরোহণের দুইদিন আগে বৃহস্পতিবার হঠাৎ নিজের দেহরক্ষীকে রাণী হিসেবে ঘোষণা করেন মহা ভজিরালংকর্ন। তিন বারের বিবাহবিচ্ছেদের পর চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে রাণী সুথিদার নাম জানালেন তিনি।
দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার ও সামরিক বাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টায় লিপ্ত গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যকার নির্বাচন সংকটের মধ্যেই রাজসিংহাসনে অভিষেক হলো মহা ভজিরালংকর্নের।
রাজমুকুট মাথায় নিয়ে শনিবার সকালে প্রথম রাজকীয় আদেশে রাজা বলেন, ‘আমি ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে রাজ্য পরিচালনা করব। জনগণের সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য সর্বদা আমি প্রচেষ্টা চালাব।’
পরে দুপুরে প্রাসাদ থেকে রথপ্রকৃতির এক বাহনে করে শোভাযাত্রা নিয়ে ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ মন্দিরে যান মহা ভজিরালংকর্ন। এ সময় হলুদ পোশাক পরে তাঁকে স্বাগত জানাতে আসেন হাজারো থাই নাগরিক। তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘রাজা দীর্ঘজীবী হোন, আমাদের রাজা দীর্ঘজীবী হোন’।
৮০ জন বৌদ্ধভিক্ষু সমস্বরে এমন স্লোগান দিলে রাজা বলেন, আমি বৌদ্ধধর্ম রক্ষায় সদা নিয়োজিত থাকব।
পরে রাতে রাজা মহা ভজিরলংকর্ন ও রাণী সুথিদা রাজপ্রাসাদে ঘরউষ্ণকরণ রীতি পালন করবেন। এর মধ্য দিয়ে তিনদিনের প্রথম পর্যায়ের অভিষেক আয়োজন শেষ হবে।