শহরে শহরে কড়া নিরাপত্তা
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দুঃস্বপ্নের রাতের পর বিশ্বের বিভিন্ন শহরে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাতে ছয়টি স্থানে হামলা চালিয়ে দেড় শতাধিক মানুষ হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন ও ভারতের কয়েকটি শহরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, বোস্টন, ম্যাসাচুসেটস, সেন্ট লুইস, শিকাগো, সান ফ্রান্সিসকো; যুক্তরাজ্যের লন্ডন, ব্রিংমহামসহ বিভিন্ন শহরে কড়া নিরাপত্তা আরোপ করা হয়।
প্যারিসে হামলার পরপরই সতর্ক থাকার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরীর মেয়র বিল বলাসিও। শহরে সতর্কতা জারির পর এক টেলিভিশন বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘বারবার আমরা একই ধরনের আক্রমণ দেখতে পাচ্ছি। সময় হয়েছে সন্ত্রাসীদের আক্রমণের বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া এবং সতর্ক থাকার।’
নিউইয়র্ক পুলিশের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, শহরের পর্যটক ও লোকসমাগম বেশি এমন এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ফরাসি দূতাবাস ও ম্যানহাটনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কার্যালয়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব এলাকায় সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানের বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া বাস, ট্রেনসহ অন্যান্য যানবাহনে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। কোনো হুমকি নয় বরং পূর্বসতর্কতা হিসেবে শহরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান নিউইয়র্ক পুলিশপ্রধান।
নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সির সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। ওয়াশিংনে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভবনগুলোতে নিরাপত্তা ও রাস্তায় টহল বাড়িয়েছে পুলিশ। শহরের ফরাসি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে পুলিশি তল্লাশি ও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। প্যারিসে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।
এদিকে ভয়াবহ এই হামলার পর আগামী সপ্তাহে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অনুষ্ঠিতব্য অ্যাপেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান বাতিল করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদাদো। আগামী ১৬ থেকে ১৯ নভেম্বর অ্যাপেকের শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ অ্যাপেকভুক্ত দেশগুলোর অন্য নেতারা যোগদানের বিষয়টি আবারও নিশ্চিত করেছেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিরাপত্তায় পুলিশ, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীসহ ২০ হাজারের বেশি নিরাপত্তা সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিপাইনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দে শানমুগাম।