সিরিয়ায় তুর্কি অভিযানে ‘নিহত ২২৮’, পালাচ্ছে হাজারো কুর্দি

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ২২৮ জন নিহত এবং বহু আহত হয়েছে বলে তুরস্ক দাবি করেছে। এ অভিযানের ফলে কুর্দি অধ্যুষিত এলাকা ছেড়ে হাজারো মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। রাস আল আইনের নিকটবর্তী দুটি এবং তেল আবিয়াদের নিকটবর্তী পাঁচটি গ্রামের দখল নিয়েছে তুর্কি বাহিনী।
তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য দিয়েছে। কুর্দিশরাও এ অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে বলে জানা গেছে। মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফের ২৩ যোদ্ধা এবং অন্যদিকে তুর্কি মদদপুষ্ট সিরিয়ার বিদ্রোহী গ্রুপের ছয় যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
তুরস্ক সীমান্ত থেকে সিরিয়ার ৩০ কিলোমিটার অভ্যন্তর পর্যন্ত হামলা চালাচ্ছে তুরস্ক। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এর চেয়ে ভেতরে হামলা চালানো হবে না।
গত বুধবার থেকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ‘অপারেশন পিস স্প্রিং’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক। তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা উত্তর সিরিয়ায় কুর্দি গেরিলাদের ১৮১টি অবস্থানে হামলা চালিয়েছে।
জাতিসংঘ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তুর্কি হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তুরস্কে বিদ্রোহী কুর্দিদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে এমন অভিযোগে সিরিয়ার কুর্দি মিলিশিয়া বাহিনীকেও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে আসছে তুর্কি সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার কয়েকজন কুর্দি আইনপ্রণেতার বিরুদ্ধে অপরাধ তদন্ত করছে তুর্কি পুলিশ। এবং তুরস্কের দিয়ারবাকির শহর থেকে ওই সম্প্রদায়ের বেশ কিছু লোককে আটকও করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা তুর্কি সামরিক বাহিনীর এই অভিযানের সমালোচনা করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে কথা বলেন। এর কয়েক দিনের মাথায় কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফের ওপর এই অভিযান শুরু করল তুরস্ক। মার্কিন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ট্রাম্পের গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই তুরস্ক এটি করেছে।
হামলার পর বৃহস্পতিবার টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের সামনে তিনটি পথ খোলা আছে। হাজার হাজার সৈন্য পাঠিয়ে সামরিক বিজয় নিয়ে আসা, তুরস্ককে অর্থনৈতিক কঠোর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে পর্যুদস্ত করা অথবা তুর্কি এবং কুর্দিদের মধ্যস্থতা করা।’
এই টুইটের পরিপ্রেক্ষিতে ‘কোনটা করা হবে’ সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মধ্যস্থতা করব।’
এ ছাড়া তুর্কি অভিযান ও হামলার ফলে আইএস সদস্যরা পালিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে যাচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তো আসছে না। ইউরোপের দেশগুলোতে যাচ্ছে।