ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীতে ফেসবুক-যোদ্ধা ব্রিগেড
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/02/01/photo-1422800137.jpg)
গোলাবারুদ, বোমা থেকে শুরু করে জনগণের মন, আধুনিক যুদ্ধের ময়দান এখন অনেক বিস্তৃত। শুধু বিভিন্ন দেশের সরকারই নয়, আল- কায়েদা, আল-শাবাব, আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোও সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমকে ব্যবহার করছে অত্যন্ত সফলভাবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী টুইটার ও ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালানোর জন্য নতুন একটি ব্রিগেড গঠন করছে।
সরাসরি রক্তপাতে জড়িত থাকবে না বলে এই ব্রিগেডকে ‘নন লেথাল’ বা ‘প্রাণঘাতী নয়’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেশটির সশস্ত্র, নৌ ও বিমানবাহিনী থেকে সেনা ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে এ ব্রিগেড গঠন করা হবে। যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীর ৭৭তম ব্রিগেড হিসেবে পরিচিত হবে এটি। প্রাথমিকভাবে এতে এক হাজার ৫০০ সদস্য থাকবে বলে ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের সাথে কথোপকথনে যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এ যুগে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে শুধু গোলাগুলিনির্ভর যুদ্ধ করে জেতা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা। ফেসবুক-টুইটার সে জন্য দারুণ কার্যকর বলে প্রমাণিত হতে পারে।’
যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর আরেক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘যুদ্ধের প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে এবং ব্রিটিশ বাহিনীকে তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। এ ছাড়া ইরাক থেকে ইউক্রেন পর্যন্ত লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এ কথাই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, বিমান, কামান বা ট্যাংকের মতো তথ্যযুদ্ধেরও অসীম গুরুত্ব রয়েছে এবং জনগণের মন ও মানসিকতাকে যুদ্ধের অনুকূলে আনার প্রয়োজনীয়তা অনিবার্য হয়ে উঠেছে।’ তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা বেড়ে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। বিভিন্ন ভাষায় ফেসবুক পেজ চালাচ্ছে তারা। তৎপরতা বেশি এমন দেশগুলোয় জনসমর্থন বাড়ানো এবং সদস্য সংগ্রহ করতে সংশ্লিষ্ট ভাষায় ফেসবুকে পেজ কিংবা বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে নিয়মিত বিভিন্ন বার্তা লিখে যাচ্ছে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সদস্যরা।
জঙ্গি তৎপরতা দমনে বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী ইউনিটগুলোর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির ব্যবহারও অনেক দিনের। এ ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগের প্লাটফর্মগুলো সবার কাছেই বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। সার্বিক মনিটরিং, সংশ্লিষ্ট বা সন্দেহভাজন বিশেষ গ্রুপ কিংবা ব্যক্তির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ কিংবা তাদের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে যোগ করেছে নতুন কৌশলগত মাত্রা।