মুসলমান বলে নামানো হলো বিমান থেকে!

গেল ডিসেম্বর মাসের ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার শার্লট থেকে মিশিগানের ডেট্রয়েটে যাওয়ার জন্য বিমানে চেপেছিলেন মোহাম্মদ আহমেদ রাদওয়ান নামের এক ব্যক্তি। বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে যখন তিনি বিমানে নিজের আসনে বসলেন ঠিক তখনই ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট বললেন, ‘মোহাম্মদ আহমেদ, সিট নম্বর ২৫-এ, আমি আপনাকে পর্যবেক্ষণে রাখব।’
ঠিক এক মিনিট পর ওই ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট আরো একবার আশপাশের সব যাত্রীদের শুনিয়ে বললেন, ‘মোহাম্মদ আহমেদ, এটা খুব বড় একটা নাম, সিট নম্বর ২৫-এ, আমি আপনাকে পর্যবেক্ষণে রাখব।’
এ সময় ওই ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের কাছে মোহাম্মদ রাদওয়ান জানতে চান, কেন এবং কী কারণে তাঁকে উদ্দেশ্য করে এই ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। জবাবে তিনি জানান, তিনি সবাইকেই পর্যবেক্ষণে রাখবেন। উল্টো মোহাম্মদ রাদওয়ান অসহিষ্ণু আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, আমেরিকান এয়ারলাইনসের কর্মীর সঙ্গে এ ধরনের বাক্য বিনিময়ের কারণে কিছুক্ষণ পরই মোহাম্মদ রাদওয়ানকে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনাটি জানার পর এ বিষেয় মার্কিন পরিবহন দপ্তরে একটি অভিযোগ দাখিল করেছে দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন (সিএআইআর)। সেখানে আমেরিকান এয়ালাইসের বিরুদ্ধে ‘বৈষম্যমূলক আচরণের’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিএআইআরের আইনজীবী মাহা সাইয়েদ আজ বৃহস্পতিবার পাঠানো এক চিঠিতে মোগাম্মদ রাদওয়ানের সঙ্গে ঘটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বর্ণনা দেন।
চিঠিতে বলা হয়, ‘আমেরিকান এয়ারলাইনসের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে ওই বিমানে যাত্রা করতে না পেরে সেদিন বিকেলে ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে অন্য এয়ারলাইনসের বিমানে করে নিজের গন্তব্যে যান মোহাম্মদ রাদওয়ান।’
মাহা সাইয়েদ তাঁর চিঠিতে আরো উল্লেখ করেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মুসলিম বিদ্বেষের যে অবস্থা চলছে এই ঘটনাও তারই একটি। কিন্তু একটি জাতীয় বিমান পরিবহন সংস্থার কাছ থেকে এমন ঘটনা আশা করা যায় না। যারা আইনগতভাবে বৈধ প্রত্যেক যাত্রীকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বাধ্য।’
এ ঘটনায় আমেরিকান এয়ারলাইনসের এক মুখপাত্র দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘এ বছরের শুরুতেই সিএআইআরের সঙ্গে এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। আমরা পুরো ঘটনার তদন্ত করেছি এবং দেখেছি যে সেখানে কোনো বৈষম্যমূলক আচরণের ঘটনা ঘটেনি।’